
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটি দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধনের পর সুপার কর্তৃক সংবাদ সম্মেলন এবং সর্বশেষ সেই সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ তুলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১টায় কলাপাড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরামের কার্যালয়ে এ পাল্টা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বালিয়াতলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউসুব শিপাই।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নাসিমা বেগম, ইদ্রিস আকন, মো. আজিজ, খোকনসহ ওই এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইউসুব শিপাই বলেন, বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আ.ব.ম. ফয়েজ উল্লাহ অভিভাবকদের অবহিত না করে এবং কোনো নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ছাড়াই গোপনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। একই সঙ্গে ঘুষের মাধ্যমে আয়া, নৈশপ্রহরী ও পিয়ন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার সকালে অভিভাবক ও স্থানীয় সাধারণ জনগণ মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন। ওই মানববন্ধনে তিনি বক্তব্য দেওয়ার পরদিন শুক্রবার সুপার আ.ব.ম. ফয়েজ উল্লাহ তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করেন বলে দাবি করেন ইউসুব শিপাই।
লিখিত বক্তব্যে জমি দান সংক্রান্ত অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে ইউসুব শিপাই সাংবাদিকদের বলেন, সুপার তার বাবার মাধ্যমে মাদ্রাসায় ০.১৩ শতাংশ জমি দানের যে দাবি করেছেন, তা সঠিক নয়। তার বাবা অন্য একটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় জমি দান করলেও ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসায় কোনো জমি দান করেননি বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, উত্তর কালামপুর কালিবাড়ি নূরানী দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও আমতলী ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদারকে বর্তমানে ওই মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধেও পূর্বে একটি জাতীয় দৈনিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগসংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল বলে দাবি করা হয়।
ইউসুব শিপাই বলেন, মাদ্রাসায় এ পর্যন্ত যেসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে সম্পন্ন হয়েছে। এসব অনিয়ম আড়াল করতেই সুপার শুক্রবার তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন বলে তিনি দাবি করেন। সেখানে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছোট বালিয়াতলী এম.এম.এ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আ.ব.ম. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ইউসুব শিপাইয়ের বাবা মাদ্রাসার নামে ১৩ শতাংশ জমি রেকর্ড করে দিলেও জমিটি এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়কে কেন্দ্র করেই মানববন্ধন ও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি কখনো ওলামা লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। নিয়োগে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর দাবি অনুযায়ী, ইউসুব শিপাই নিজেই টাকা নিয়েছেন এবং পরে তা ফেরত দিয়েছেন। টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন মাদ্রাসার সুপার আ.ব.ম. ফয়েজ উল্লাহ।