
মো. মহসীন খান
ডিসেম্বর বাঙালির জীবনে অহংকারের মাস। দিকেদিকে উড়লো বিজয় পতাকা। মহান বিজয়ের মাস। এ মাসেই একে একে মুক্ত হতে থাকে শত্রুকবলিত বাংলার গ্রাম-গঞ্জ, শহর-বন্দর। প্রতিদিনই নতুন নতুন মুক্ত এলাকায় উড়তে থাকে বিজয় পতাকা। বাঙালির বিজয়, পাকিস্তান এবং রাজাকারদের পরাজয়ের মাস।
আজ ৩ ডিসেম্বর, বুধবার। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড গঠনের মধ্য দিয়ে ভিন্ন মাত্রা পায় বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম। এদিন যৌথ কমান্ড গঠনের পর পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ। একই দিনে পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করে- উদ্দেশ্য ছিল বাঙালির মুক্তিযুদ্ধকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধে পরিণত করে ফায়দা লোটার চেষ্টা।
পূর্বাঞ্চলে ভারতের ৭ ডিভিশন সৈন্য ও বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানের ৪ ডিভিশন সৈন্য মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। যুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণের পর বাংলার দামাল ছেলেদের মনোবল বহুগুণ বেড়ে যায়। পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে হামলা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। সম্মুখযুদ্ধে দখলদাররা পরাজিত হতে থাকে। যৌথ বাহিনীর আক্রমণের মুখে স্বাধীনতার শত্রুদের সময় ঘনিয়ে আসে।
৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ভারতীয় বিমান বাহিনী তেজগাঁও বিমানবন্দর আক্রমণ করে। এখানেই পাকিস্তানি বাহিনীর সব স্যাবার জেট মজুত ছিল। কারণ, তখন একমাত্র এই ঘাঁটি থেকেই বিমান উড়তে পারত। ভারতীয় মিগ সেই ঘাঁটিতে হানা দিলে পাকিস্তানি স্যাবারগুলো বাধা দিতে এগিয়ে যায়। প্রায় সারারাত ধরে চলে বিমানযুদ্ধ। প্রথম আক্রমণেই পাকিস্তানের অর্ধেক বিমান ধ্বংস হয়ে যায়। বিমানবন্দর ও কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিন ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী।
পাকিস্তানের ভারত আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন গঠিত হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড।
- চলবে
লেখক: সাংবাদিক