প্রেমে ব্যর্থ বাবুগঞ্জের মামুন ১২ বছর ধরে শিকলবন্দি!
হোম পেজ »
বরিশাল »
প্রেমে ব্যর্থ বাবুগঞ্জের মামুন ১২ বছর ধরে শিকলবন্দি!

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, বাবুগঞ্জ(বরিশাল)
তেরেনাম” সিনেমাকেও হার মনিয়েছে বাবুগঞ্জের সাইদুল ইসলাম মামুনের বাস্তব প্রেম কাহিনী। সুযোগ পেলে যেদিকে মন চায় চলে যান। তাই ঘরে চৌকির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় তাকে। আর এভাবেই জীবনের ১২টি বসস্ত কেটে গেছে মামুনের। ঠিক ২০ বছর আগে উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের আইচার হাওলা গ্রামের মোসলেম বেপারী ও সোনাবান বেগম দম্পতির ছেলে মেধাবী ছাত্র সাইদুল ইসলাম মামুন বাবুগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিলেন। তখন একই বিদ্যালয়ের মৌরি(ছদ্মনাম) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একসময় তাদের সম্পর্কের বিষয়টি মেয়ের পরিবার জানতে পারে। বিষয়টি নিয়ে মামুনের উপর চাপ দেয় মেয়েটির পরিবার এবং মেয়েটির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতেই মামুন ধীরে ধীরে মানুষিক ভারসম্য হীন হয়ে পরে। সেই থেকে মামুন পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত। একপর্যায়ে মানুষিক বিপর্যস্ত মামুনকে শিকলবন্দী করে রাখে তার পরিবার। গত ১২ বছর যাবৎ পায়ে শিকল পরিয়ে তালা মেরে রাখায় হয় মামুনকে। স্থানীয় সাংবাদিকরা মামুনের খোঁজ নিতে গেলে মা সোনাবান বেগম এসব কথা বলেন। অসহায় সোনাবান বেগম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে মামুনকে ভালো করার জন্য এমন কোন যায়গা নেই যেখানে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যায়নি। আমার স্বামী দিনমজুর, তার জমিজমা বিক্রি করে এতদিন চিকিৎসা করিয়েছি। মাঝে এক দালালের মাধ্যমে পাবনা পাঠাই। সেখানে মানুষিক হাসপাতালে ভর্তি না করে একটি ক্লিনিকে নিয়ে ফেলে রেখে আমাদের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এখন আমাদের ভাঙা ঘর ছাড়া কিছুই নেই। আমার ছেলেটা জন্য আপনারা কিছু একটা করেন। তিনি তার অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে সরকার ও সমাজের বৃত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ পাশে দাঁড়ানোর আহবান করেন। স্থানীয়রা বলেন, মামুন ভালো শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অসুস্থ। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলেন না। মানুষ দেখলেই এটা–সেটা ছুড়ে মারেন। এ জন্য তাঁকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি তার গার্ডিয়ানের সাথে কথা বলেছি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাকে সহযোগিতার সুযোগ থাকলে আমারা তাকে সহযোগিতা করবো।
এএ/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০২:১৪ ●
৩৪ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)