
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)
কুয়াকাটার চরগঙ্গামতি সংরক্ষিত বনে দিনরাত নির্বিচারে গাছ কেটে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। মঙ্গলবার সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে এ তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
পরিদর্শনে দেখা গেছে, বনখেকোরা নিয়মিত বনাঞ্চলের বড় বড় গাছ কেটে পাচার করছে। এতে বনভূমি উজাড় হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। বনাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটা গাছের অংশ, গুঁড়ি ও ডালপালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়াত আলী বলেন, যখন যার প্রয়োজন হয় তখনই গাছ কেটে নেওয়া হয়। কেউ সমুদ্রের স্রোতে উপড়ে পড়া গাছ কাটে, আবার কেউ বনের ভেতরে ঢুকে বড় গাছ কেটে নিয়ে যায়। বনবিভাগের লোকদের উদাসীনতা দেখে মনে হয় তারা টাকা-পয়সার বিনিময়ে এসব বনদস্যুদের সুযোগ দিচ্ছে।
পরিবেশবাদী ও ধরা সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন, বন উজাড় হলে শুধু গাছই নয়, সামুদ্রিক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় উপকূলীয় মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি বাড়বে। মেজবাহউদ্দিন মাননু বলেন, গাছের শেকড় ভূমি ধরে রাখে এবং উপকূলকে সুরক্ষা দেয়। নির্বিচারে গাছ কাটা উপকূলীয় ভাঙন, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি বহুগুণে বাড়াবে।

চরগঙ্গামতি সংরক্ষিত বনের বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঝড়ে ভেঙে পড়া বা মরে যাওয়া গাছ স্থানীয়রা অনেক সময় কাটে। তবে অবৈধভাবে কেউ গাছ কাটলে আমরা ব্যবস্থা নেই। ইতোমধ্যে কিছু গাছ জব্দ করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বনদস্যুর হুমকির কারণে আইনী ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হয়।
বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে.এম মনিরুজ্জামান জানান, কিছু বনদস্যু রাতের আধারে গাছ কেটে নিয়েছে। গাছ পাচারকারীদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বেশ কিছু কাটা গাছ জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।