
পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের বড়হরপাড়া খালের আয়রণ ব্রিজটি যেন এখন দুর্ভোগের এক প্রতীক। তিন বছর আগে শুরু হওয়া ব্রিজটির পুননির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ব্রিজটির কাজ বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও অগ্রগতি নেই বললেই চলে।
একটি ব্রিজ শুধু কাঠামো নয়, এটি একটি অঞ্চলের জীবনপ্রবাহের মূল সেতুবন্ধন। বিশেষ করে এই ব্রিজটি স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চলাচলের প্রধান মাধ্যম হওয়ায় এর বিকল্পহীনতা এখন স্পষ্ট। কোমলমতি শিশুদের বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া শুধু অমানবিক নয়, ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণও। ইতোমধ্যে একজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে, স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে অনেকেই।
স্থানীয়রা যেভাবে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচলের চেষ্টা করছেন, তা তাদের সংকল্পের প্রতিচ্ছবি হলেও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি এক প্রকার জ্বলন্ত প্রতিবাদও বটে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক—সবার কণ্ঠে একটিই প্রশ্ন: তিন বছরেও কাজ শেষ হলো না কেন? ঠিকাদারের অনুপস্থিতি, লাইসেন্স বাতিলের গুঞ্জন এবং প্রকৌশলীর নিরবতা—সব মিলিয়ে এটি এখন একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যর্থ প্রকল্প।
এখানে প্রশ্ন শুধু ব্রিজের নয়, প্রশ্ন জনগণের প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধেরও। শিশুর শিক্ষা থেমে যাক, দুর্ঘটনায় জীবন বিপন্ন হোক—এ কি একটি আধুনিক রাষ্ট্রে ভাবা যায়?
আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত, জবাবদিহিমূলক এবং কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু “দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে” বলে দায় সেরে গেলে চলবে না—বাস্তবে কাজ শুরু হোক।
এই ব্রিজের নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এলাকাবাসীর কষ্ট থামবে না। সবার আগে শিশুদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।