![রাজধানীর বিভিন্ন হাটে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু](https://www.sagorkonnya.com/cloud/archives/2019/08/244-thumbnail.jpg)
ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
রাজধানীর বিভিন্ন হাটে এরইমধ্যে কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে। ঈদের তিন দিন আগে থেকে এসব হাটে পশু বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। কোরবানির পশু কেনাবেচায় এবার রাজধানীর ২৪টি হাটের জায়গা নির্ধারণ করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এবার ১৪ কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটের অনুমতি দিয়েছে ডিএসসিসি। একটি স্থায়ী পশুর হাটসহ উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় কোরবানির পশুর হাটের সংখ্যা ১০টি। ডিএসসিসি এলাকার উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠ ও আশপাশের খালি জায়গা। জিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, রহমত খেলার মাঠ, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ, মেরাদিয়া বাজার, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠ, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, শনির আখড়া ও দনিয়া মাঠ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা মাঠ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠ, আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং ১ ও ২ নম্বর সেকশনের খালি জায়গা এবং আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা।
গাবতলী উত্তর সিটি করপোরেশনের স্থায়ী পশুর হাট। এ ছাড়া উত্তরা ১৫ নম্বর সেকটরের ১ ও ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম পাশের খালি জায়গা, ভাটারা সাঈদ নগর হাট, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ, মোহাম্মদপুর বু্দ্িধজীবী সড়ক সংলগ্ন পুলিশ লাইনের খালি জায়গা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, মিরপুর ডিওএইচএসের পাশে সেতু প্রোপার্টি ও পাশের খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের তিন নম্বর সেকশনের ই ব্লকের খালি জায়গা, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা এবং ভাসানটেক রাস্তার নির্মাণাধীন অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অংশ এবং আশপাশের খালি জায়গা।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু আনা শুরু হয়েছে গাবতলী পশুর হাটে। বেচাকেনা শুরু না হলেও গরু দেখতে আসছেন অনেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার থেকে হাটে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, এখনো সামিয়ানা টাঙানো হচ্ছে, মাটি খুঁড়ে বাঁশ পোতার কাজ চলছে। তৈরি হচ্ছে গরু রাখার প্যান্ডেল। কোরবানির পশু যেন গরমে কষ্ট না পায়, ঝুলানো হচ্ছে সিলিং ফ্যান। গাবতলী গরুর হাটে প্রায় সারাদেশ থেকেই গরু আসছে। কুষ্টিয়া থেকে এসেছে সবচেয়ে বেশি গরু। জেলার মিরপুর, খাজানগর, হুকসা, কুমারখালী, ঝাউদিয়া, হরলা, চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা ও রাহিণী থেকে গরু আসছে ট্রাক-ট্রলার ভরে। এছাড়াও হাটে গরু এসেছে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়া, টাঙ্গাইলের লালপুর, মাগুরার আজমপুর অঞ্চল থেকে। কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে গাবতলীর হাটে গরু নিয়ে এসেছেন কালু ব্যাপারী। তিনি বলেন, হাটে গরু এনেছি ১৮টি। এখন তো আর ব্যাপারীদের হাতে ব্যবসা নেই। ব্যবসা চলে গেছে খামারিদের কাছে। যে খামারের মালিকের ১০ কোটি টাকা আছে, সে ব্যাংক থেকে লোন পায় ২০ কোটি। এ কারণেই তাদের হাতে ব্যবসা চলে গেছে। আমাদের সামর্থ্য কম বলেই তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছি না। তিনি বলেন, তিন বছর ধরে গরুর ব্যবসায় লসে আছি। আগে গরু বিক্রি করে ভালো লাগতো। আগে একজন এসে পাঁচ-সাতটা গরু কিনতো, এখন একটা গরু কিনতে আসে পাঁচ-সাত জন মানুষ। ধার-দেনা করে এবার ৬০ লাখ টাকার গরু এনেছি। আমার সব গরুই বড় বড়। মেসার্স জাকারিয়া গাভীর খামারের মালিক মো. আনিসুর রহমান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আমরা গাবতলীর হাটে গরু বিক্রি করে আসছি। এবার আমাদের খামার থেকে দু’দিন মিলিয়ে ৬১টি গরু এনেছি। প্রায় আট থেকে নয় মাস আমাদের খামারের ছয় জন রাখাল দিয়ে গরুগুলো পালা হয়েছে। প্রতিটি গরুর খাবারে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। হাটে ৬১টি গরু দেখভালের জন্য রাখা আছে ২২ জন রাখাল। তিনি বলেন, আমাদের গরুর পেছনে খরচ হয়েছে এক কোটি থেকে সোয়া কোটি টাকা। আশা করছি, এবার দেড় থেকে দুই কোটি টাকায় গরুগুলো বিক্রি করতে পারবো।
এফএন/এমআর