ঘূর্ণিঝড় ফণী আমতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ঘরে ফিরছে মানুষ

প্রথম পাতা » বরগুনা » ঘূর্ণিঝড় ফণী আমতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ঘরে ফিরছে মানুষ
শনিবার ● ৪ মে ২০১৯


---

আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আমতলী-তালতলী উপজেলার উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে ২০ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের তিন শতাধিক আধা কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত ও সহস্রাধিক গাছপালা উপড়ে পরেছে। দুই উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরের দুই লক্ষাধীক লোকজন সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিল। শনিবার সকাল থেকে তারা আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ী ঘরে ফিরে গেছেন। বন্যা শেষ হলেও সাগর ও পায়রা নদী উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে সাগর ও পায়রা সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার সকালে বন্যায় সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে ইউএনও মোঃ সরোয়ার হোসেনও পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান উদ্যোগে শুকনা খাবার বিতরন করা হয়েছে। ২০ ঘন্টা দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আমতলী-তালতলী উপজেলার কোথাও কোন বড় ধরনের দূর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী প্রভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে আমতলী- তালতলীর উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি ও হালকা দমকা হাওয়া শুরু হয়। রাত বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃষ্টির ও বাতাসের পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে। রাত ১টার দিকে বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এ বাতাসের গতিবেশ বেশী সময় স্থায়ী ছিল না। সাগর ও পায়রা নদী উত্তাল রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী ও অমাবশ্যার জ্যোর প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলর ২০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহির ও চরাঞ্চল এলাকার সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষ শনিবার সকাল হওয়ার সাথে সাথে বাড়ী ঘরে ফিরে যাচ্ছেন। বন্যায় দুই উপজেলায় তিন শতাধিক কাঁচা ঘর ও দুই শতাধিক পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এদিকে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন ও পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের উদ্যোগে সাইক্লোন সেল্টারে অবস্থানরত ও চরাঞ্চলের মানুষকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার রাত আটটায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয় কিন্তু শনিবার চারটা পর্যন্ত ২০ ঘন্টা আমতলী ও তালতলীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অপর দিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন আশারচর, খোট্টারচর, নিদ্রাসকিনা, ফকিরহাট, বালিয়াতলী, জয়ালভাংঙ্গা, তেতুঁলবাড়িয়া, নিউপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, ছোটবগী, পচাঁকোড়ালিয়া, আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া, লোচা, ফেরীঘাট, আমুয়ারচর, বৈঠাকাটা, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালীর নাইয়াপাড়া ও হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে গ্রাম গুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আমতলী-তালতলী উপজেলার কোথাও কোন বড় ধরনের দূর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
তালতলী উপজেলার গাবতলী গ্রামের ইসহাক হাওলাদার জানান, শনিবার সকাল থেকেই মানুষ সাইক্লোন সেল্টার থেকে বাড়ী ঘরে যেতে শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, এ বন্যায় তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক, আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব পরার পূর্বেই চরাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার মানুষকে সাইক্লোন সেল্টারে এনেছি। ওই সাইক্লোন সেল্টারে বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করেছি। শনিবার সকাল থেকে চরাঞ্চলের মানুষকে শুকরা খাবার ও খেচুরী খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে প্রায় দুই শতাধিক ঘর বাড়ী আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। বন্যা শেষ হওয়ার সাথে সাথে শনিবার সকালে সাইক্লোন সেল্টারে অবস্থানরত সকল ইউনিয়নে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। তিনি আরো বলেন ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আমতলীতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৬:৩৮ ● ৬৩৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ