প্রাথমিক শিক্ষায় বাণিজ্য! একাধিক গাইড বই কিনতে বাধ্য হচ্ছে, অভিভাবকরা জিম্মি
প্রথম পাতা »
লিড নিউজ »
প্রাথমিক শিক্ষায় বাণিজ্য! একাধিক গাইড বই কিনতে বাধ্য হচ্ছে, অভিভাবকরা জিম্মি
![প্রতীকী ছবি](https://www.sagorkonnya.com/cloud/archives/2019/03/not-copy.jpg)
মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া থেকে॥
নাম প্রকাশ করা যাবেনা। পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিশুর অভিভাবক। মডেল স্কুলটিতে পড়াচ্ছেন সন্তানকে। প্রথম কিনলেন একটি গাইড। দিগন্ত। ৫৫০ টাকায়। জনৈক শিক্ষকের এটি আবার পছন্দের নয়। তার নির্দেশে কিনতে হলো আরেক গাইড স্কয়ার। দাম ৫৫০ টাকা। তাতেও হবেনা। এবার বেঁকে বসলেন আরেক স্যার। তার নির্দেশে জুপিটার গাইড কিনতে হলো। দাম ৫০০ টাকা। এখনও আরেক গাইড, পাঞ্জেরী কেনার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। অসহায় বেচারা অভিভাবক, মধ্যবিত্তের টানাপোড়েন। এবার বেঁকে বসলেন তিনি সন্তানের যা হোক আর কিনবেন না কোন গাইড। এই হলো কলাপাড়ার প্রাথমিক শিক্ষার হাল-হকিকত। অভিভাবকরা যাবেন কোথায়। এহেন হয়রাণি। গাইড কেনার প্রেশার। যেন উচ্চরক্তচাপে পরিণত হয়েছে। যেন মানবিক বিবেচনাও নেই কারও কারও। এমন অসহায় আর্তি বহু অভিভাবকসহ ছোট্ট সোনামনিদের। পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণেই গলদঘর্ম অবস্থা। স্কুলের ক্লাশে লেখাপড়া তথৈবচ। শিক্ষকের নিজস্ব কোচিংএ পড়ার অব্যাহত চাপ। যেন চিড়েচ্যাপ্টা অবস্থা শিশু ও তার অভিভাবকদের। সবাই যেন জিম্মিদশায়। কতিপয় চিহ্নিত শিক্ষকরা সরকারের প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা করে দিচ্ছে। সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে জাতীয়করনসহ শিক্ষকদের স্বস্তিদায়ক বেতনভাতা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে এক শ্রেণির শিক্ষকরা চরম উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছেন। শিশুদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের অন্তরায় হচ্ছেন এরা। এই শিক্ষক সিন্ডিকেট এখন সরকারের মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের অন্তরায় হয়ে আছে। এরা একেক স্কুলে টানা যুগ পেরিয়ে দিচ্ছেন। স্কুলেও যাচ্ছেননা ঠিকঠাক। শুধু নিজের আর্থিক ফায়দাকে বাস্তবায়নে মধ্য ও নিম্নবিত্ত অভিভাবকদের চরম দুরবস্থায় ফেলছেন। কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল আহম্মেদ জানান, পঞ্চমে আনুমানিক সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। তাতে একটি করে গাইড বই কিনলেও অভিভাবকদের বাড়তি গুনতে হয়েছে প্রায় ২৩ লাখ টাকা। কিন্তু একাধিক গাইড কেনার জন্য বাধ্য করছেন এক শ্রেণির শিক্ষকরা। এতো একটি ক্লাশের দৃশ্য। অন্য ক্লাশের দৃশ্যপট একই। যেন বইয়ের কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হয়ে শিশুদের বাধ্য করছেন চিহ্নিত একদল শিক্ষক। যদিও শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, গাইড বই পড়াতে একেবারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ এর বাস্তবায়ন নেই। মাত্র কিছু কমিশনের লোভে এক শ্রেণির শিক্ষকরা অধিকাংশ শিক্ষকের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন। পাশাপাশি সরকারের প্রাথমিক শিক্ষাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর ক্ষতির কবলে পড়ছেন অভিভাবকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:০০:৩৪ ●
৫৭৩ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)