জাহিদ রিপন, সাগরকন্যা রিপোর্ট॥
স্কুলের সামনে খোলা মাঠে জড়ো হয়েছে নানা বয়সের প্রায শতাধিক নারী। সবার হাতে রং বে-রংয়ের ঘুড়ি। ঘুড়িতে লেখা রয়েছে নারী মুক্তির নানা শ্লোগান। নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে নিজের মনের ভাবনা, অভিযোগ, সুপারিশ লিখেছেন নিজেরাই। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চম্পাপুর ইউনিয়নের গ্রামীন জনপদের শতাধিক নারীকে নিয়ে এমন ব্যাতিক্রমী ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করেছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা আভাস। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা একশন এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় শেষ বিকেলে ব্যাতিক্রমী এ ঘুড়ি উৎসব দেখতে ভীড় জমায় গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশু। মুহূর্তেই ঘুড়ি উৎসব পরিনত হয় মিলন মেলায়।
প্রান্তিক জনপদের অনগ্রসর নারীরা আকাশে ঘুড়ি উড়ানোর এমন সুযোগ পেয়ে হয়ে ওঠেন আনন্দে উদ্বেলিত। গৃহিনী আমেনা বেগম (৪৯) জানান, যে সময়ে বড় হয়েছি। তখন গ্রামে মেয়েদের ঘুড়ি ওড়ানো ছিল নিষেধ। সম বয়সী ছেলেরা ঘুড়ি ওড়াত দূর থেকে তা তাকিয়ে দেখতাম। খুব শখ ছিল। কিন্তু পারিনি। আজ ঘুড়ি ওড়াতে পেরে বেশ অনন্দ লাগছে। মনে হয় মুক্ত আকাশে আজ ঘুড়ি হয়ে নিজেই উড়ছি। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক সদ্য কিশোরীত্ব পেরেনো দুই সন্তানের জননী (১৯) বলেন, যা আজও বলতে পারিনি কারো কাছে সে সব কথা আজ ঘুড়িতে লিখেছি। বাল্য বিয়ে নামের যন্ত্রনার কথা, কিশোরী বয়সে মা হওয়ার যন্ত্রনার কথা সব লিখে আকাশে উড়িয়ে দিলাম। তিনি বলেন, আমার মত আর কোন মেয়ের জীবন যেন নস্ট না হয়।
আভাস সফল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, নারীরাও পুরুষের মুক্ত। এ ভাবনা চুকু গ্রামীন জনপদের নারীদের কাছে পৌছে দেয়ার জন্যই এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন। আমার মনে হয় আমরা এর থেকে বেশ ভাল সফলতা পেয়েছি। এসব নারীদের দাবীর কারনে আগামীতেও আমরা এমন আয়োজন করতে চাই।