গৌরনদীতে ভূঁয়া ওয়ারিশ সনদে কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ!

প্রথম পাতা » বরিশাল » গৌরনদীতে ভূঁয়া ওয়ারিশ সনদে কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ!
শনিবার ● ২২ জুলাই ২০২৩


গৌরনদীতে ভূঁয়া ওয়ারিশ সনদে কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ!

গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও পূর্ব বাকাই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সঞ্জিব কুমার হালদার ওরফে সুধীর  মেম্বারের  বিরুদ্ধে তিন পুত্র সন্তানের জনক প্রয়াত চাচাতো ভাই ব্রজেন্দ্র হালদারকে নিঃসন্তান দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদপত্র দিয়ে কোটি টাকা মূল্যের ১একর ১৬ শতাংশ জমি আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই জমি নামজারি করে সুধীর মেম্বার ও তার সহোদর ভাই মিলন হালদার  স্থাণীয়  ৫ব্যক্তির কাছে কিছু জমি  বিক্রি করে অর্ধকোটি টাকার বেশী হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রয়াত ব্রজেন্দ্র হালদারের ছোট ছেলে বিকাশ হালদার এ অভিযোগ করেন।  বিষয়টি জানাজানি হলে  জমি ক্রেতাদের মাঝে  চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, উপজেলার পূর্ব বাকাই মৌজার এসএ ১৯৮নং খতিয়ানের ২৯০,২৯৪,২৯৮ নং দাগের  ৬৫ শতাংশ ও এস.এ ২০০নং খতিয়ানের ২৭৯,২৯১,২৯২ নং দাগের ১ একর ৩৪ শতাংশ জমির এস.এ রেকডিয় মালিক  রামপ্রসাদ হালদারের পুত্র ফটিক চন্দ্র, স্বরুপ চন্দ্র, ক্ষিরোধ চন্দ্র, বিনোদ চন্দ্র হালদার। ওই জমি ব্.িএস ১৩৪নং খতিয়ানের ৪০৬নং দাগের ৭৪ শতাংশ,  বিএস ১৩৬নং খতিয়ানের ৪০৫নং দাগের ১০ শতাংশ, বি.এস ১৩৭নং খতিয়ানের ৪১২নং দাগের ২০ শতাংশ ও বি.এস ২০০নং খতিয়ানের ৪০২,৪০৩নং দাগের ৬৫ শতাংশ জমির বিএস রেকডীয় মালিক স্বরুপ চন্দ্র হালদারের পুত্র ব্রজেন্দ্র হারদার, বিনোদ চন্দ্র হালদারের পুত্র সঞ্জিব কুমার হালদার, মিলন কুমার হালদার। খরিদকৃত ও পৈতৃক সূত্রে বিএস রেকর্ডে ব্রজেন্দ্র হালদারের  নামে  মোট জমির ৮১০ সহস্রাংশ, পৈতৃক সূত্রে সঞ্জিব কুমার হালদারের নামে ৯৫ সহস্রাংশ ও মিলন হালদারের নামে ৯৫ সহস্রাংশ জমি  রেকর্ড রয়েছে।
জমির একাংশেল গৃহীতা (ক্রেতা) ভূক্তভোগী  মোহাম্মদ আলী সরদার অভিযোগ করে বলেন, পূর্ব বাকাই গ্রামের  ব্রজেন্দ্র   হালদারের তিন পুত্র সন্তান থাকা সত্ত্বেও প্রয়াত ব্রজেন্দ্রকে নিঃসন্তান দেখিয়ে চাচাতো ভাই সঞ্জিব কুমার হালদার, মিলন হালদার  খাঞ্জাপুর ইউপি থেকে ওয়ারিশ সনদপত্র তুলেছেন। যাহার বই নং-৩৫৫/১৭, তারিখ-০৯-১২-১৭ইং। ওই ওয়ারিশ সনদপত্র দেখিয়ে  ৫৮জি/১৭-১৮নং নামজারি কেস মূলে ১৭-১২-২০১৭ইং তারিখের আদেশ বলে বিএস ১৩৬,১৩৭,২০০নং খতিয়ানের  রেকডিয় মালিক ব্রজেন্দ্র হালদারের অংশ থেকে বিএস ৪০৬,৪০৫,৪১২,৪০২,৪০৩নং দাগের  ১ একর ১৬ শতাংশ জমি কর্তন করে সঞ্জিব কুমার হালদার ও মিলন হালদারের নামে রেকর্ড  করেছে।  নামজারি রেকর্ডের পর সুধীর মেম্বার ও তার ভাই মিলন  আমাকেসহ প্রতিবেশী ৫ ব্যক্তির কাছে  প্রায় ৮০  শতাংশ জমি  বিক্রি করে অর্ধকোটি টাকার বেশী হাতিয়ে নিয়েছে বলে মোহাম্মদ আলী সরদার অভিযোগ করেন।
উল্লেখিত অবিযোগগুলো বরে প্রয়াত ব্রজেন্দ্র হালদারের ছোট ছেলে ঢাকায় কর্মরত বিকাশ হালদার বলেন,  ওয়ারিশ সনদপত্র তুলে  বাবার অবিক্রিত জমি আমরা ভাইরা বিক্রি করব।
এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও আ’লীগ নেতা সঞ্জিব কুমার হালদার ওরফে সুধীর হালদার বলেন,   আমার চাচাতো ভাই ব্রজেন্দ্র হালদারের স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি ১৯৯৬ সালে লোকমান ভাইর কাছে বিক্রি করে সপরিবারে  ডাসার থানাধীন শশিকর গ্রামে  চলে যায়। জমির ক্রেতা (গৃহীতা)  জমি ভোগদখল না করার কারণে জমির বিএস রেকডীয় মালিক ব্রজেন্দ্র হালদারের নাম কাটতে প্রয়াত ব্রজেন্দ্রকে নিঃসন্তান দেখিয়ে  খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ওয়ারিশ সনদপত্র তুলেছি। আমাদের নামে রেকর্ড করানোর স্বার্থে এইটুকুই অন্যায় করেছি। প্রয়াত ব্রজেন্দ্র’র জমি নামজারি রেকর্ড করে কিছু জমি বিক্রি করেছি।
খাঞ্জাপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি নুর-আলম সেরনিয়াবাত বলেন, তৎকালিন ইউপি সদস্য সঞ্জিব কুমার হালদারের সহোদর ছোট ভাই মিলন কুমার হালদার  তার চাচাতো ভাই প্রয়াত ব্রজেন্দ্র হালদারকে নিঃসন্তান দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে   ওয়ারিশ সনদপত্র  পাওয়ার আবেদন করেন।  তৎকালিন ইউপি সদস্য সঞ্জিব কুমার হালদার  ওরফে সুধীর মেম্বারের সুপারিশের প্রেক্ষিতে আমি প্রয়াত ব্রজেন্দ্র হালদার নিংসন্তান মর্মে ওয়ারিশ সনদপত্র দিয়েছি।

এএসআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৫:৫৬ ● ১৭৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ