ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আমতলীতে বোরো চাষে ধস!

প্রথম পাতা » বরগুনা » ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আমতলীতে বোরো চাষে ধস!
মঙ্গলবার ● ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


বোরো চাষ
সাগরকন্যা আমতলী প্রতিনিধি ॥
ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আমতলীতে বোরো ধান চাষে ধস নেমেছে। কৃষকরা লোকসানের ভয়ে এ বছর বোরো ধানের চাষ করছে না। গত বছরের তুলনায় এ বছর অর্ধেক জমিতে চাষ কম হয়েছে। কৃষকদের দাবী ধান উৎপাদনে যে পরিমাণ খরচ ওই ধান বিক্রি করে সেই পরিমাণ টাকা আয় হয় না। বরং লোকসান হচ্ছে। ফলে বোরো ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, গত বছর উপজেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার হেক্টর। ওই লক্ষ্যমাত্রা গত বছর অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু গত বছর বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় এ বছর ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। এ বছর একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে দুই হাজার ৭’শ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো চাষ অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত বছর একমণ ধান উৎপাদনে ৭’শ ৫০ থেকে ৮’শ টাকা খরচ হয়েছে। ওই পরিমান ধান বাজারে বিক্রি হয়েছে ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা। এতে ধান উৎপাদনে কৃষকদের মণ প্রতি ২’শ থেকে ২’শ ৫০ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। গত বছর লোকসান হওয়ায় এ বছর কৃষকরা বোরো চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, গত বছর এক একর জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। এতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলেও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় ওই এক একর জমির ধান ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এতে আমার ৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। গত বছর লোকসান হওয়ায় এ বছর মাত্র ৬৬ শতাংশ জমিতে বোরো চাষ করেছি।

আমতলী চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের কৃষক জিয়া উদ্দিন জুয়েল জানান, গত বছর ৭০ শতাংশ জমিতে বোরো চাষ করেছি। কিন্তু বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর বোরো চাষ করিনি। আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের কৃষক সোহেল রানা জানান, গত বছর তিন একর জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়েছিল কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম থাকায় ২০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। তাই এ বছর বোরো চাষ করিনি।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম বদরুল আলম বলেন, গত বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ছয় হাজার হেক্টর। ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু এ বছর একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৭’শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে কিছুটা সমস্যা হবে।

এমএইচএকে/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩০:২৯ ● ৫০৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ