চরফ্যাশনে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ

প্রথম পাতা » ভোলা » চরফ্যাশনে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
শুক্রবার ● ২৯ নভেম্বর ২০১৯


 

চরফ্যাশনে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে মোতালেব সিকদারের পরিবারের উপর দীর্ঘদিন যাবৎ ওয়ারিশের জমি জবরদখল ও পর্যায়ক্রমে বাড়ির লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ব্যাপারে চরফ্যাশন থানায় নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। যার নং ১৮।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একসময়ের বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও দানবির মাদ্রাজ ইউনিয়ন পূর্ব মাদ্রাজ  অঢেল সম্পত্তির মালিক হাজী আলীমদ্দিন সিকদার তিন ঘরের চার ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ১৯৭০ সনের বন্যায় মোহাম্মদপূর এর বাড়ি থেকে পানিতে বাসিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার সমূদয় সম্পদ ওয়ারিশদের মাঝে সম বন্টন হয়।
হাজী আলি সিকদার এর প্রথম ঘরের সন্তান হাজী আবদুল মোতালেব সিকদার বাবার ন্যায় ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক দানবীর। যিনি বসবাস করতেন পূর্বমাদ্রাজ ৭নং ওয়ার্ডের বাড়িতে এবং সকলের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠাতা করেন নিজ বাড়ির দরজায় হাজী আবদুল মোতালেব সিকদার জামে মসজিদ।
সৎ ছোট ভাইদেরকে বিবাহ করানো থেকে শুরু করে সকল দায়িত্বই পালন করেন নিজের সন্তানের ন্যায় অবিভাবকের মতো। চরকলমি ইউনিয়ন উত্তর চরমংল মৌজার দাতা শ্রী রাখাল চন্দ্রদাস থেকে হাজি আবদুল মোতালেব সিকদার নিজ ক্রয়কৃত ৬ একর জমির একক মালিক হন এবং দ্বিতীয় ঘরের আপর ভাই হাজী আবুল হাসেম সিকদার নিজ ক্রয়কৃত ৩.৫০ একর জমির একক মালিক হন।
যা পরবর্তীতে আইনি জটিলতার (নিলাম) কারণে অন্যের ন্যায় সাময়িক সময়ের জন্য বাবা হাজি আলি সিকদার এর নামে রেকর্ড করান এবং ১৯৭০ইং বন্যায় আকস্মিক ম্যৃতুর করনে বাবা বড় ছেলেদের ক্রয়কৃত মোট ৯.৫০ একর জমি ফিরত দলিল দিয়ে যেতে পারেনি।
পরবর্তী সময়ে ছোট ঘরের সৎ ভাই হাজী গনি সিকদার গং লোভ সংবরণ করতে না পেরে সকল কিছু জানা শর্তেও বাবার নামে রেকর্ডিয় সম্পত্তির ওয়ারিশ মূলে অংশ দাবি করে এবং জবরদখল করতে যায়। তখন বাধ্য হয়ে বড় দুই ভাই ভূল রেকর্ড সংশোধনে আদালত করেন এবং দীর্ঘ বছর পরে নিজ পক্ষে রায় পায়, কিন্তুু ততদিনে ওই সম্পদের দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ নষ্ট হয় তাদের। তথাপি ভাই ভাইর ভিতরে সামাজিক সম্পর্ক অটুট রাখেন বড় ভাই হাজী আবদুল মোতালেব ও হাসেম সিকাদার ।
অন্য দিকে মাদ্রাজের মোহাম্মদপূর মৌজার আলী সিকদার এর ৫ একর জমি চার ভাইয়ের নামে রেকর্ডসহ সমভাবে ভোগদখল থাকলেও ছোট সৎ ভাই হাজী গনি সিকদার গং দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জবরদস্তি করে অন্য সকল ওয়ারিশদেরকে বঞ্চিত করে ভোগদখল করে আসছে দির্ঘদিন যাবদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরমাদ্রাজ ইউনিয়ন মোহাম্মদপূর গ্রামে মৃত হাজী আলি সিকদার ২২ একর জমির সম্মুখে একটি বাড়ি ও পৃথকভাবে ৩ একর জমি দান করে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। বড় ছেলে হাজী আবদুল মোতালেব সিকদার ওই মসজিদের মোতাওয়ালির দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই মসজিদের সাথে সকল ওয়ারিশরা আংশ হারে রেকর্ডীয় জমির মালিক ছিলেন।
হাজী আবদুল মোতালেব সিকদারের এক মেয়ে খাতেজা ১৯৯৮ সনে ফ্রেব্রুয়ারী মাসে মারা যাওয়ার পর দাফন এর জন্য মসজিদের পাশে কবরস্থানে একটি কবর খনন করা হয়। গনি সিকদারগং বাধা প্রদান করেন কবর মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলে হয়। তখন বাদ্য হয়ে হাজী আবদুল মোতালেব সিকদারের ছেলেরা সমতলভূমিতে দ্বিতীয়বার  খতেজার কবর করে দাফন কাজ সম্পন্ন করেন।
তার কিছু দিন পরে সমূদয় সম্পদ ডিয়ারা ম্যাপ অনুযায়ী জমি মাপার আমিন দিয়ে পূনরায় মাপ দিলে উক্ত জমায় প্রথমে বাধা প্রধান করা কবরস্থানের জমি সহ ১৬ শতাংশ জমি পাওনা হন হাজী আবদুল মোতালেব সিকদারের ওয়ারিশগন। ওই কবর স্থানের অংশ পাওয়ায় কবরে এলাকার গরীব অসহায় পরিবার কেই মারা গেলে কবর দেয়ার ঘোষনা প্রদান করেন মোতালেবের পরিবার।
মোহাম্মদপূর গ্রাম নদি ভাংগনের কবলে পরলে পূনরায় পূর্বমাদ্রাজ এসে গনি সিকদার তার ছেলেদেরকে নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করছে। তার বাড়ী উত্তর পাশ দিয়ে জনসাধারন চলাচলের জন্যে স্থানীয় গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ততকালীন চেয়ারম্যান জসিম সররমান একটি সড়ক নির্মাণ করেন। উক্ত সড়কটি জোর জুলুম করে গভীর কুপ খনন করেন। এতে অনেকে যাতায়াতের সময় সাধারন মানুষ আহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার ভাতিজা-নাগর মনিরদের ক্ষমতার দাপটে অত্যাচার-নির্যাতন হুমকী দামকী দিয়ে আসছে মামলার বাদী নজরুল সিকদার ও তার পরিবারেরকে।  যা এলাকার সকল মানুষই অবগত।
ভাতিজা নাগর এবং মনির তার মামা’রা এলাকার আওয়ামীলীগের নেতার প্রভাব খটিয়ে ওয়ারিশদের জমি দখল ও একাধিক বার গাছ কেটে নিয়ে যায়।
আওয়ামীলীগের আত্মিয় পরিচয় ভাগিনা হওয়ার নাগর এবং মনির সিকদার এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের বিচারের তোয়াক্কা না করে থানা পুলিশ দিয়ে অহেতুক হয়রানি করে আসছে। ভূক্তভোগী পরিবার মামলা করলে সহজেই দলীয় প্রভাবে মামলার জামিন লাভ করে পূনরায় মামলার বাদী ও  স্বাক্ষীদেরকে হুমকি দেয়া হয়।
ভূক্তভোগী পরিবার প্রতিবেদন এর সাথে আলাপ কালে তাদও দাবী নিজেদের পাওনা সম্পত্তিতে নির্ভয়ে শান্তিতে জীবন জাপন করার জন্যে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। এই ব্যপারে চরফ্যাশন থানার ওসি শামসুল আরেফীন বলেন, আমরা মামলা গ্রহণ করেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহশ করা হবে।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৮:৩৭ ● ৫৯৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ