দুমকিতে দেশীয় মাছের সংকট, ভরসা সামুদ্রিক মাছে

হোম পেজ » পটুয়াখালী » দুমকিতে দেশীয় মাছের সংকট, ভরসা সামুদ্রিক মাছে
সোমবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫


দুমকিতে দেশীয় মাছের সংকট, ভরসা সামুদ্রিক মাছ

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, দুমকি (পটুয়াখালী) 

পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছের তীব্র আকাল দেখা দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ খাল, বিল ও জলাশয় পানিশূন্য হয়ে পড়ায় বাজারগুলোতে মিলছে না কৈ, শিং, মাগুর, টাকি, পুঁটি, দেশি চিংড়িসহ খাল-বিলের পরিচিত মাছ। স্থানীয় চাহিদা মেটাতে ব্যবসায়ীরা এখন আশ্রয় নিচ্ছেন লোনা পানির সামুদ্রিক মাছের ওপর।
উপজেলা শহরের পিরতলা বাজার, নূতনবাজার, রাজাখালী, তালতলী, বোর্ড অফিস এলাকা, আঙ্গারিয়া বন্দর, মুরাদিয়ার কলবাড়ি ও তালুকদার হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অধিকাংশ বাজারেই দেশীয় মাছের আড়ত প্রায় ফাঁকা। কোথাও অল্প কিছু দেশি মাছ মিললেও দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
ব্যবসায়ীরা জানান, চারদিকে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ বেষ্টিত থাকায় দুমকির অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি খাল-বিল ভরাট, দখল এবং শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দেশীয় মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে স্থানীয় জলাশয়ে মাছের উৎপাদন কমে গেছে।
পিরতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা বলেন, আগে স্থানীয় খাল-বিল থেকেই কৈ, শিং, মাগুর উঠত। এখন সেগুলো প্রায় নেই। বাধ্য হয়ে কালাইয়া, দশমিনা, গলাচিপা ও মহিপুর এলাকা থেকে লোনা পানির সামুদ্রিক মাছ এনে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় এসব মাছের দামও তুলনামূলক বেশি পড়ে।
ক্রেতারাও দেশীয় মাছের অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গৃহিণী রেবেকা বেগম বলেন, দেশি মাছ স্বাদ ও পুষ্টিতে ভালো। কিন্তু বাজারে নেই বললেই চলে। সামুদ্রিক মাছ কিনতে হচ্ছে, কিন্তু সেগুলো সবার পছন্দ নয়।
স্থানীয় মৎস্য সংশ্লিষ্টরা জানান, খাল-বিল সংরক্ষণ, অবৈধ ভরাট বন্ধ এবং বর্ষা মৌসুমে জলাশয়ে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছের সংকট আরও বাড়বে। তারা খাল পুনঃখনন, প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণ এবং স্থানীয় জলাশয়ে দেশীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করার দাবি জানান।
এদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, দেশীয় মাছ রক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও জলাশয় ব্যবস্থাপনা জোরদারের উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বাস্তব পদক্ষেপ দ্রুত না নিলে দুমকিতে দেশীয় মাছের ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।


এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৭:০৮ ● ৩৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ