
সাগরকন্যা প্রতিবেদন, বরগুনা
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে আবারও বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে বরগুনা থানায় মামলা করেন বিএনপির মাঠ পর্যায়ের মো: বাদল নামের এক নেতা। এই মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু, বরগুনা-১ আসনের সদ্য সাবেক এমপি গোলাম সরোয়ার টুকু, বরগুনা-২ আসনের সাবেক এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর কবীর, বরগুনা পৌরসভার সাবেক তিন মেয়র ও ১৭ জন আইনজীবীসহ ১৩৪ জন। এর আগেও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে বিএনপির বিভিন্ন নেতা কর্মি ৫ টি মামলা করেছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোর্ট জিআরও মাহবুব হোসেন।
জানা যায়, বাদি মো: বাদল বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বাদি ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী ও ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল পৃথক তিনটি ঘটনা দেখিয়ে ২২ নভেম্বর বরগুনা থানায় ১৩৪ জন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর কবীরের নেতৃত্বে সকল আসামীরা বাদিকে তার বরগুনা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে চোখ বেধে বেধড়ক মারধর করে। চোখ বেধে দীর্ঘদিন আয়না ঘরে আটক রাখে। আয়না ঘর থেকে বের করে বরগুনা থানায় দেয়। বাদিকে দুই দফায় ৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে পুলিশ। ওই সময় আসামীরা পুলিশকে দিয়ে শাইখুল হাদিস মুফতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন রহমানীর সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছে এমন বক্তব্য দিতে বাধ্য করে।
বাদি বলেন, আসামীদের অত্যাচারে আমি কয়েকটি বছর এলাকায় থাকতে পারিনি। আমি ৭ মাস জেল হাজতে ছিলাম। আসামীরা আমাকে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে। আমি জঙ্গি, আমি বিএনপির উগ্রপন্থির লোক। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আমি দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলাম। আসামী গোলাম মর্তুজা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের লোক হওয়ায় আমাকে বেশি নির্যাতন করে।
আসামীরা আমাকে যে পরিমান ক্ষতি ও নির্যাতন করেছে তা ভাষায় বর্ননা করার মত নয়। আসামীরা গান পাউডার দিয়ে আমার সাইকেল পুড়িয়ে দেয়। আমার ফার্নিচারে আগুন ধরিয়ে দেয়। আসামীরা আমার বরগুনা শহরে কাঠপট্টি সড়কে আমার ভাড়া প্রতিষ্ঠানে বোমা ফাটিয়ে রামদা ছেনা দিয়ে ত্রাস সৃস্টি করে। আসামী অ্যাটমের নেতৃত্বে ককটেল ফাটিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফার্নিচার ভাংচুর করে। আমাকে মারতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের অফিসে নিয়ে যায়। অ্যাটম হাতুড়ি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। এতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল এ কারনে মামলা করতে পারিনি। আসামী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু, মো: জাহাঙ্গীর কবীর জেল হাজতে থাকার কারনে তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। অন্য আসামীরা পলাতক। তবে আসামী অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান জুয়েল বলেন, আমার বাড়ি পাথরঘাটায়। এই বিষয় আমি কিছু জানিনা। এমন কি বাদিকে আমি চিনি না। এই মামলায় ১ নম্বর সাক্ষী করা হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার সেক্রেটারী মো: আসাদুজ্জামান আল মামুন ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরগুনা পৌর আমীর এমএ জলিলসহ বিএনপির নেতাদের। বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: ইয়াকুব হোসাইন বলেন, বাদির টাইপকৃত মামলাটি ২২ নভেম্বর এজাহার ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলাটি তদন্তের জন্য বরগুনা থানার এসআই মো: সোহেল রানাকে দেওয়া হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর