
সাগরকন্যা প্রতিনিধি, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এক ফেরিওয়ালাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় খবর সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দেন লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক সোলেমান।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হোসেনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ফেরিওয়ালা নান্না শেখ (৬০) সাগরকন্যাকে জানান, প্রতিদিনের মতো কাপড় বিক্রির উদ্দেশ্যে তিনি ওই এলাকায় গেলে স্থানীয় বেল্লাল (২৬)সহ আরও কয়েকজন তাঁকে ডেকে ঘরে বসায়। পরে কৌশলে কাপড়ের গাট্টিতে একটি মোবাইল রেখে চুরির অভিযোগে তাঁকে এলোপাতাড়ি পেটায়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। অভিযুক্তরা তাঁর কাছে থাকা নগদ ২৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন নান্না শেখ।
স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় নান্না শেখ তুলাতলি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এদিকে খবর সংগ্রহে গেলে দৈনিক দেশ রূপান্তরের কুয়াকাটা প্রতিনিধি কেএম বাচ্চু ও অন্যান্য সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণে বাধা দেন যুবদল নেতা সোলেমান। কেএম বাচ্চু বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম, তখন যুবদল সোলেমান নিউজ না করার হুমকি দেন এবং পরে আমাদের ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করে ‘চাঁদাবাজ সাংবাদিক’ বলে প্রচার করেন। আমি এ বিষয়ে আইনের সহযোগিতা নিচ্ছি।
ঢাকা পোস্টের কলাপাড়া প্রতিনিধি এসএম আলমাস বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম, তখন সোলেমান এসে বিষয়টি সমাধানের কথা বলে চলে যেতে বলেন। পরে তিনিই সাংবাদিকদের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন, যা নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অভিযুক্ত বেল্লালের মা বিলকিস বেগম বলেন, সাংবাদিকরা এসেছিলেন, তবে তাদের সঙ্গে আমার টাকার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। আমার নাম ব্যবহার করে কে কী বলেছে, তা আমি জানি না।
অভিযুক্ত সোলেমান নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথার কাটাকাটি হয়েছে, তবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই।
এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, সোলেমানের আচরণ নিন্দনীয়। এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়, দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। সাংবাদিকদের নিয়ে এমন আচরণ কাম্য নয়।
মহিপুর থানা যুবদলের সভাপতি সিদ্দিক মোল্লা বলেন, ঘটনাটি আমরা জেনেছি। যাচাই ছাড়া কারও বিরুদ্ধে ভিডিও প্রকাশ করা ঠিক নয়। অভিযোগ সত্য হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, ফেরিওয়ালাকে মারধরের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের হেনস্তা বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।