আ.লীগ-বিএনপি নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া তালতলীতে বিএনপি অফিসে অগ্নি সংযোগে মামলা!

হোম পেজ » রাজনীতি » আ.লীগ-বিএনপি নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া তালতলীতে বিএনপি অফিসে অগ্নি সংযোগে মামলা!
শুক্রবার ● ১ আগস্ট ২০২৫


---

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, আমতলী (বরগুনা)

বরগুনার তালতলীতে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠানে হামলা, অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আওয়ামী লীগের দুই উপজেলা সভাপতি, দুই সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ, চার ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৮১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সগির হাওলাদার বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মো. ইফতি হাসান ইমরান মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন।

হামলার সময় ও অভিযোগঃ

মামলার অভিযোগে বলা হয়,  ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল বিকেলে তালতলী উপজেলার মালিপাড়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির আয়োজিত ইফতার পার্টিতে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা ককটেল, ধারালো রামদা, লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হয়। তারা প্রথমে অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার-টেবিল, প্যান্ডেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেয়। পরে মাঠসংলগ্ন বিএনপি অফিসে ঢুকে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ভাঙচুর করে অফিসেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া সেখানে রাখা মোটরসাইকেলগুলোতে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। সরকারি রাস্তারও ক্ষতি হয়। মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৯ লাখ টাকা বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে আছেনঃ

তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু, আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি স্বপন জোমাদ্দার, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু, নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু, কড়াইবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম শিকদার পনু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার, আমতলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা। এছাড়া মামলায় আরও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮১ জনে।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগঃ

মামলার বাদী মো. সগির হাওলাদার বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা গত ১৫ বছর ধরে সাধারণ মানুষ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে। এবার তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করেছি। কোনো সাধারণ মানুষ বা বিএনপির নেতাকর্মীকে এই মামলায় আসামি করা হয়নি। বিএনপি আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম হক বলেন- ঘটনা সত্য, তবে কিছু নিরীহ মানুষকেও আসামি করায় মামলাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, মামলায় বিএনপি, যুবদল ও সাধারণ মানুষকেও আসামি করা হয়েছে- এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

আ.লীগ নেতাদের প্রতিক্রিয়াঃ

তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা মামলা।আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মতিয়ার রহমান বলেন, আমি তালতলীর ঘটনার সঙ্গে জড়িত না, তবুও আমিসহ আমতলীর তিন নেতাকে অহেতুক আসামি করা হয়েছে।

আদালতের আদেশ ও তদন্তঃ

আমতলী আদালতের পেশকার মো. কামাল হোসেন জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবি পুলিশের ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ডিবি’র ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, আদালতের নথিপত্র এখনো হাতে পাইনি। পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৭:০০ ● ১১৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ