চরফ্যাশনে দৈনিক সাড়ে ৫ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানী

প্রথম পাতা » ভোলা » চরফ্যাশনে দৈনিক সাড়ে ৫ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানী
সোমবার ● ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯


চরফ্যাশনে দৈনিক ৫ কোটি ৪০লাখ টাকার ইলিশ রপ্তানী হচ্ছে

চরফ্যাশন ( ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চরফ্যাশনের বেতুয়া-ঘোষেরহাট লঞ্চঘাট দৈনিক লঞ্চযোগে ঢাকাসহ সরাসরি মাছ ধরার ট্রলারের মাধ্যমে বরিশালে প্রায় ৫ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানী হচ্ছে। সোমবার সরেজমিন বেতুয়া লঞ্চঘাটেসহ বিভিন্ন মৎম্যঘাট পরিদর্শণ করে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন মৎস্য আড়তদারগন।
জানা যায়, আসলামপুর বেতুয়া লঞ্চঘাটে ৩ লঞ্চে দৈনিক ১৭৫ জুড়িতে ১৭শ ৫০মন যার মূল্য ১৮হাজার টাকা করে ৩ কোটি  ১৫ লাখ টাকা। ঘোষের হাট লঞ্চঘাটে ৪৫জুড়িতে ৪৫০মন যারমূল্য ৮১লাখ টাকা। এ ছাড়াও সাগর থেকে সরাসরি বরিশালে রপ্তানী হচ্ছে ১ কোটি ৪লাখ টাকার ইলিশ। সর্বমোট ৫কোটি টাকার ইলিশ ঢাকা-বরিশালসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী হচ্ছে।
বেতুয়া মৎস্য ঘাটের আড়ৎদার নুরে আলম মাষ্টার বলেন, জেলেরা এবার ধারদেনা শোধ, ছেলে-মেয়ের আবদার পূরণ, সাধ করে স্ত্রীর জন্য দু’খানা শাড়ি কেনার সময় এটাই।  আড়ৎদার, দোকানে-মহাজনের কাছে দেনায় বন্দি হওয়া- এসবের পর ইলিশ মৌসুমেই যেন জেলেরা মুক্ত হয়।
সামরাজ মৎস্য ঘাটের হারুন অর রশিদ বলেন, ঝুড়িভর্তি মাছ উঠছে আড়তে। তার আগে ইলিশ বাক্সে। হাঁকা হচ্ছে দর। মুহূর্তে বেচাকেনা শেষ। মাছের গন্তব্য আড়তদারের আইসবাক্স। এখান থেকে মাছ যাবে বড় আড়তে। বড়-ছোট সব সাইজের ইলিশ বড় শহরের বড় বাজারে ক্রেতাদের সামনে ওঠার জন্য যাত্রা করে। সেখানে তো আবার শহরে ক্রেতারা অপেক্ষা করছেন কাঙ্ক্ষিত ইলিশের। বহু প্রতীক্ষিত ইলিশকে ঘিরে ঘাটে ঘাটে টাকা। মাঝি-জেলের মাছধরায় যে বিনিয়োগ আড়তদারের করেন, তা ইলিশ ঘাটে ওঠামাত্রই উসুল করে নেন। এরপর বড় আড়তদার, তার বড় আড়তদার- সকলেই নিজেদের বিনিয়োগটা তুলে নেন সঙ্গে সঙ্গে। একইসঙ্গে টাকার অঙ্কে ইলিশের দামও বাড়তে থাকে।
চরফ্যাশন বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, ইলিশের বড় হালি (৪টা) ২-৩হাজার টাকা, মাঝারো ইলিশ ১-২হাজার টাকা, ছোট সাইস ৫শ‘-১হাজার টাকা। ৯ ইঞ্চির উপরের মাছ গুলো ২শ‘ থেকে ৫শ হালি টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলে আবদুল করিম বলেন, ইলিশ পড়ায় টেইলারিং দোকান, খাবারের হোটেল, খুচরো যন্ত্রাংশের দোকান, ওয়ার্কশপ, এমনকি চায়ের দোকান, মুদি-মনোহরির দোকানও যেন এসময় প্রাণ ফিরে পায়। দ্বীপ চরফ্যাশন উপজেলার প্রায় সবগুলো স্থান মেঘনা তীরবর্তী হওয়ায় এখানে মাছঘাট ও জেলের সংখ্যা অনেক বেশি।
চরফ্যাশনের বেতুয়া, সামরাজ, কুকরির মনুরা, ঢালচরের হাওলাদার বাজার, নুরাবাদের বকসী, গাছির খাল, নীলকমলের বাংলা বাজারঘাট-এ তালিকা হবে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ। উপকূলের সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী এইসব ঘাটগুলো যেন ইলিশ মৌসুমের এই সময় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়। ইলিশ মৌসুম আসার আগে অন্য সময়ে এইসব ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, মাছঘাটগুলো একেবারেই নিষ্প্রাণ।
চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাটে দেখা হয় আরৎদাড় আবদুর ররের সঙ্গে। খুব ব্যস্ত। মাছ উঠছে। কথা বলার সময় নেই। সময় নিয়ে একটু আলাপ। কেমন আছেন? জবাব একশব্দে- ভালো। মাছ কেমন পড়ছে? জবাব- বেশ। ইলিশ মৌসুম এমন একটা সময় যখন জালে ইলিশ উঠলে জেলে আনন্দিত হয়। আর ইলিশ না পড়লেই তাদের মন খারাপ।
দুলারহাট বাজারের ক্রেতা আলী হোসেন বলেন, এখন ইলিশের মূল্য ক্রয় ক্ষমতার হাতের নাগালেই রয়েছে। মাছ খেতেও সু-স্বাদু।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:০৪:৫৭ ● ৩৭৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ