গলাচিপায় প্রধানমন্ত্রীর ঘরের আশায় তাকিয়ে অসহায় পরিবারটি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » গলাচিপায় প্রধানমন্ত্রীর ঘরের আশায় তাকিয়ে অসহায় পরিবারটি
রবিবার ● ১০ এপ্রিল ২০২২


যেখানে বসবাস করছেন মালতী রানী।

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর গলাচিপায় প্রধানমন্ত্রীর ঘরের আশায় অসহায় পরিবারটি তাকিয়ে আছে। উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের মধ্য হরিদেবপুর গ্রামের মালতীরানীদের বসবাস। অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থাকছেন তারা।
গোলখালী ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কেশব চন্দ্র দাসের স্ত্রী মালতীরানী। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। বিগত পাঁচ বছর পূর্বে মাছ ধরতে রামনাবাদ নদীতে গেলে জালসহ তাদের একমাত্র ছেলে কমল দাস (১৯) পানিতে ডুবে মারা যায়। সেই শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। দুই কন্যা সন্তানকে নিয়েই তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু মালতী রানীর স্বামী কেশব চন্দ্র দাসের একমাত্র আয়ে সংসার চলছে খুব কষ্টে। তাদের মেয়েদের লেখাপড়া করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কেশব দাস অন্য মানুষের পানের বরজে কাজ করেন। তাদের ছোট মেয়ে অপু রানী হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। পড়ালেখা চালাতে না পেরে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কেশব চন্দ্র দাস জানান, তাঁর জন্মের পরেই দারিদ্রতা নিত্য সঙ্গী হয়। আশা ছিল ছেলেটা তাঁর সাথে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু সর্বনাশা নদী কেড়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, এখন আমি একা অসহায় হয়ে পড়েছি। একদিন অসুস্থ থাকলে ওইদিন আর ঘরের উনুন জ¦লে না। আমার দুই শতাংশ জায়গা থাকলেও টাকার অভাবে তাতে ঘর তোলা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে অন্যের ঘরে আশ্রিত থাকি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি ঘর পেলে বাকি জীবনটা সুখে কাটাতে পারতাম। অন্য মানুষের বাড়িতে আর থাকতে হতোনা।
এবিষয়ে কেশব চন্দ্র দাসের স্ত্রী মালতী রানী বলেন, আমার স্বামীর রোজগারে আমাদের সংসার চলে। থাকি অন্য মানুষের বাসায়, খুব কষ্টে। অন্য মানুষের বাড়িতে থাকি বলে প্রায় সময়ই তাদের কথা শুনতে হয়। আমাদেরকে যদি সরকারীভাবে একটি ঘর দিত, তাহলে আমরা সরকারের কাছে চিরঋণী থাকতাম। এ বিষয়ে গোলখালীর হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিক বিল্পব রায় সাগরকন্যাকে বলেন, আমাদের ছাত্রী অপু রানীর ভাই কমল দাসের মৃত্যুর পরে বাবা-মা অনেক কষ্ট করেন। তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারীভাবে তাদেরকে একটি ঘর দিলে পরিবারটির অনেক উপকার হবে। গোলখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খালেক মাস্টার বলেন, মালতী রানীর দুইশতক জমি থাকলেও নিজের কোন ঘর নেই। সরকারীভাবে একটি ঘর তারা প্রাপ্য। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. রবিউল মৃধা বলেন, আমার ওয়ার্ডে ওদের মত অসহায় খুব কম লোকই আছে। বাপ-দাদার দুইশতক জমি আছে। টাকা না থাকায় সেখানে কোন ঘর তুলতে পারে নাই। তাদের একটি ঘর খুব প্রয়োজন। গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, মালতী রানীর পরিবার আসলেই অসহায়। তার স্বামী অন্য মানুষের সাথে পানের বরজে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সরকারীভাবে মালতী রানীর পরিবার একটি ঘর পেলে তারা সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৯:৩৭ ● ৫৭৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ