আমতলীতে চার সন্তানের জননী গণধর্ষণের শিকার

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে চার সন্তানের জননী গণধর্ষণের শিকার
রবিবার ● ২০ অক্টোবর ২০১৯


আমতলীতে চার সন্তানের জননী গণধর্ষণের শিকার

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চার সন্তানের জননী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অজ্ঞান অবস্থান ধর্ষিতাকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী ও কলাপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী মাছুয়খালী গ্রামে শনিবার রাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, আমতলী ও কলাপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী মাছুয়াখালী খেয়াঘাটে কাওসার ও জহিরুলের সাথে একটি জেলে নৌকার দাদন টাকা নিয়ে শালিস বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে শনিবার রাতে পনের হাজার টাকা স্থানীয় শোয়েব খাঁনের নিকট জমা দেয় জহিরুল দম্পতি। ওই টাকা দিয়ে স্বামী জহিরুল আমতলী উপজেলার টেপুড়া বাজারে আসেন এবং স্ত্রী চার সন্তানের জননী মাছুয়াখালী গ্রামের বাড়ীতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ৫/৬ জনের মুখোশধারী একদল সন্ত্রাসী তার মুখ বেঁধে একটি পরিত্যক্ত ভিটায় নিয়ে যায়। ওইখানে নিয়ে আদু মাতুব্বর, মনু মুন্সি ও বাচ্চু শরীফসহ ৫ জনে পালাক্রমে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধু জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। জহিরুল বাড়ী ফিরে স্ত্রীকে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরে দুই ঘন্টা পরে স্বজনরা পরিত্যাক্ত ভিটা থেকে মুখ বাঁধা অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। ওইদিন রাত বারটার দিকে তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞান অবস্থায় ভর্তি করে। ১০ ঘন্টা পরে রবিবার সকালে তার জ্ঞান ফিরে। ওইদিনই চিকিৎসকরা তার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে প্রেরণ করেছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের  মেডিকেল অফিসার ডাঃ এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ওই নারীকে রাতে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সকালে তার জ্ঞান ফিরেছে। তিনি আরো বলেন, ওই নারীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
চার সন্তানের জননী বলেন, আমি বাড়ী যাচ্ছিলাম পথিমধ্যে  মুখোশধারী ৫/৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল আমার মুখ বেধে জোড় করে একটি পরিত্যাক্ত ভিটায় নিয়ে যায়। ওইখানে নিয়ে আদু মাতুব্বর, মনু মুন্সি ও বাচ্চু শরীফসহ ৫/৬ জনে পালাক্রমে আমাকে ধর্ষণ করেছে। তাদের নির্যাতনে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
স্বামী জমিরুল ইসলাম বলেন, নলুয়াবাগীর কাওসারের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা দাদন নিয়ে আমি জাল নৌকার কাজে যাই।  পারিবারিক সমস্যার কারনে আমি পুরো মাস কাজ করে আসতে পারিনি। এ নিয়ে শরিবার কাওসারের সাথে একটি শালিস বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে কাওসারের দেয়া দাদন বাবদ ১৫ হাজার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই টাকা স্থানীয় শোয়েব খানের নিকট দিয়ে আমি আমতলী টেপুরা বাজারে আসি এবং আমার স্ত্রীকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেই। পথিমধ্যে মুখোশধারী একদল সন্ত্রাসী আমার স্ত্রীর মুখ বেঁধে ধরে নিয়ে যায়। পরে একটি পরিত্যাক্ত ভিটায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শনিবার রাত ১০টার দিকে ওই পরিত্যাক্ত ভিটা থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি। হাসপাতালে ১০ ঘন্টা পরে আমার স্ত্রীর জ্ঞান ফিরেছে। তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেছি।
স্থানীয় সোয়েব খাঁন শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে পনের হাজার টাকা তার কাছে জমা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, জহিরুল নয়াবাগী গ্রামের কাওসারের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা দাদন নিয়ে ছিল। ওই টাকা নিয়ে জহিরুল আর কাজে যায়নি। এ নিয়ে একটি শালিস বৈঠক হয়। শালিস বৈঠকে কাওসারকে পনের হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তিনি আরো বলেন, জহিরুলের স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে এমন ঘটনা আমার জানা নেই।
কলাপাড়া থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:০১:৫৩ ● ৪৪২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ