বরগুনায় ডেঙ্গুর বিস্তার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। নতুন করে আরও ৭৩ জন আক্রান্ত হয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪০২ জনে, মৃত্যুও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ জনে। এটি কোনো সাধারণ স্বাস্থ্যসংকট নয়—এটি একটি জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের স্পষ্ট ইঙ্গিত।
সাগরকন্যা অনলাইনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অধিকাংশ আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তি বরগুনা সদর উপজেলার। এর অর্থ হলো—নগর ব্যবস্থাপনায়, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং স্থানীয় সরকারের উদ্যোগে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে। একদিকে মশার বিস্তার রোধে ব্যর্থতা, অন্যদিকে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব—উভয়ের ব্যর্থতায়ই বাড়ছে ডেঙ্গুর ছোবল।
সিভিল সার্জন নিজেই স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ আমরা দেখছি—মশা নিধনের কার্যক্রম এখনও প্রয়োজনের তুলনায় ঢিলেঢালা। বরগুনা শহরের কিছু এলাকায় মাঝে মাঝে ফগার মেশিন চালানো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা জনসমস্যা মোকাবিলার চেয়ে ‘দেখানো’র পর্যায়ে থেকে যাচ্ছে। এখন প্রয়োজন, স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্বে সমন্বিত উদ্যোগ। বরগুনা শহরের পাশপাশি উপজেলা পর্যমাায়ে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ঘন ঘন পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো দরকার। স্কুল-কলেজসহ সকল প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের বিকল্প নেই। বাসাবাড়িতে গাইডলাইন অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। ডেঙ্গু শনাক্তে দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণও জরুরী হয়ে পড়েছে। সর্বোপরি, নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত প্রচারণার পদক্ষেপও নিতে হবে পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে।
বরগুনা একটি সম্ভাবনাময় জেলা—এখানে মৃত্যু যেন একটি মশার কামড়ে এসে হাজির না হয়। বরং প্রতিটি প্রাণ হোক রক্ষিত সক্রিয় সচেতনতা আর কার্যকর প্রশাসনিক পদক্ষেপে। এটাই হোক এখন আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার।
