নবম ওয়েজবোর্ড দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে: সেতুমন্ত্রী

প্রথম পাতা » গণমাধ্যম » নবম ওয়েজবোর্ড দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে: সেতুমন্ত্রী
শনিবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০১৯


---

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
সাংবাদিকদের বেতন-ভাতার কাঠামোসহ অন্যান্য পেশাগত সুবিধাদির ব্যাপারে নবম ওয়েজবোর্ড নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন সংগঠন ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুতই বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এসংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিষয়টি একেবারে সহজ নয়, জটিল কিছু বিষয় আছে। একদিকের সমাধান করলে হবে না, সবপক্ষকে নিয়ে বসতে হবে। এরপর সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বসা হবে।
শনিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নবম সংবাদপত্র ওয়েজ বোর্ড সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান কমিটির প্রধান। এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় সভা শুরু হয়। সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ অংশ নেন। সভার মাঝখানে আসেন নিউজ পেপার অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) নেতারা। এর মধ্যে ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম প্রমুখ। শেখ হাসিনার আগের মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে ৩ ডিসেম্বর নবম ওয়েজ বোর্ড সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পরে নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে এই কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, এই মুহূর্তে আসলে বলার মতো কিছু এখনও আমাদের হাতে নেই। আমরা নতুন একটি জার্নি স্টার্ট করছি। বিষয়টি পুরনো, কিন্তু পুরনো বিষয় নিয়ে নতুন একটি যাত্রা। আমরা বিষয়টিকে কতটা সিরিয়াসলি দেখছি সেটার বড় প্রমাণ হচ্ছে বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই এ বিষয়ে হাই-পাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগের চেয়েও মনে হয় এ কমিটি আরো স্ট্রংগার, গুরুত্বের দিক থেকেও। প্রথম মিটিংয়ে এজেন্ডাটি এসেছে এবং বিবিধ আলোচনায় ছিল। কাজেই সরকার সংবাদপত্র, সাংবাদিকদের বিষয়টা কতটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এটা এই কমিটির পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে এবং আমাদের প্রথম বৈঠক আমরা ছুটির দিনে করছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা চাইছি বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান, একটা রিজনেবল-রিয়ালিস্টিক সমাধান করার জন্য। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই বৈঠক। আমরা নিজেরা আলোচনা করেছি, নোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করেছি, তাদেরকেও ধন্যবাদ তারা শর্ট নোটিশে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার অবকাশ ছিল না। আমরা প্রারম্ভিক কিছু আলোচনা করেছি এবং তাদের বটম লাইন আমরা তাদের কাছে জেনেছি। মোটামুটি এ বিষয়ে যে অবজারভেশন তারা ব্যক্ত করেছেন, খুব খোলা মনে আলোচনা হয়েছে। নতুন তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, আরো আলোচনা হবে। কমিটির প্রধান আরো বলেন, আজকে নোয়াবের প্রতিনিধিদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করবো। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দ্রুত একটা সমাধানের ব্যাপারে শেখ হাসিনা সরকার খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। সেই লক্ষ্যে এই কমিটি কাজ করে যাবে।
এ ছাড়া আজকে নতুন করে কিছু নেই। আজকের মিটিংয়ের বটম লাইন কী? প্রশ্নে কাদের বলেন, বটম লাইন হচ্ছে কো-অপারেশন, সহযোগিতা। সহযোগিতার হাত যেখানে প্রসারিত হবে সেখানে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বটম লাইন। কোন সুনির্দিষ্ট বিষয় তো আছেই। এগুলো আমার মনে হয় কম্প্রোমাইজ অ্যান্ড… কোন সমাধান করতে হলে, জটিল কোন বিষয়। বিষয়টি একেবারে সহজ নয়। এখানে জটিল কিছু বিষয় আছে। এখানে অনেক স্টেকহোল্ডার আছে। কাজেই এর সমাধান করতে হলে পারস্পরিক সহযোগিতা, কম্প্রোমাইজ অ্যান্ড অ্যাডজাস্টমেন্টটা করতে হবে। এখানে ওয়ান সাইডেড কোন সমাধান করলে ইমপ্লিমেন্টশন প্রসেস বাধাপ্রাপ্ত হবে। ইমপ্লিমেন্টশন প্রসেস যদি বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে আমি একতরফা কিছু ডিক্লেয়ার করে দিলাম এর তো কোন রেজাল্ট আসবে না। এর বেনিফিট তো কেউ পাবে না, বেনিফিট তো পেতে হবে। টেলিভিশন সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজবোর্ড করার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, টেলিভিশনের বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় আনবো। আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। আলোচনার প্রসেসের মধ্যেই এই বিষয়টি চলে আসবে।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, টেলিভিশন সাংবাদিকের বিষয়টি সুপারিশমালায় মধ্যে আছে। এই বিষয়টি কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার বিষয় সুপারিশে আছে। সেই আলোকে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। যেসব অনলাইন সংবাদপত্র সত্যিকার অর্থে ভালো সংবাদ পরিবেশন করে আজকের দুনিয়ার বাস্তবতায় সেগুলোর প্রয়োজন আছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সম্প্রচার নীতিমালার আলোকে অনলাইনের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করলে ভূঁইফোড়গুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ওয়েব বোর্ড বাস্তবায়নে পুনর্গঠিত কমিটির প্রধান এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় তথ্যমন্ত্রী ছাড়াও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ অংশ নেন। এছাড়াও নিউজ পেপার অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনেক ভূঁইফোড় অনলাইন মিডিয়ার জন্য সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেখানে আপনাদের কী ব্যবস্থা থাকবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চিহ্নিত করছি।’ আর তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অনলাইন নিয়ে আমি শুরু থেকেই বলেছি, কিছু অনলাইন আছে যেগুলো সত্যিকার অর্থে ভালো সংবাদ পরিবেশন করে। যেগুলোর প্রয়োজন আছে। অনলাইনের অবশ্যই প্রয়োজন আছে। এটা আজকের পৃথিবীর বাস্তবতা। কিন্তু কিছু ভূঁইফোড় অনলাইন আছে যারা আসলে সত্য সংবাদের চেয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর কাজে লিপ্ত। এগুলোকে আমরা চিহ্নিত করে, সম্প্রচার নীতিমালা যখন হবে এগুলোর রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করার একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেকের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সম্প্রচার নীতিমালার আলোকে আমরা এগুলোর রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করে যেগুলো ভূঁইফোড় তখন সেগুলো অটোমেটিক্যালি ফেইস আউট হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে কাজ চলছে এবং সহসা আমরা এটা করবো। অনেক সময় নাম স্বর্বস্ব পত্রিকার নামে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু করতে দেখা যায়- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো আমরা রিভাইস করবো।

এফএন/এনইউবি

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪০:৫৪ ● ১১৪৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ