২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার মূল এডিপি অনুমোদন

প্রথম পাতা » জাতীয় » ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার মূল এডিপি অনুমোদন
মঙ্গলবার ● ২১ মে ২০১৯


২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার মূল এডিপি অনুমোদন

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥

প্রথমবারের মতো ২ লাখ কোটি টাকার ঘর ছাড়ালো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। আসছে অর্থবছরে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার মূল এডিপি অনুমোদন পেয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) শেরে নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপি অনুমোদিত হয়।
পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, এবার প্রথমবারের মতো আমরা ২ লাখ কোটি টাকার এডিপির ‘ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম’ করলাম। আসছে অর্থবছরের ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ও বিদেশি উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার যোগান ধরা হয়েছে। মূল এডিপির বাইরে স্বায়ত্তশাসিত বা করপোরেশেনের থেকে ১২ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকার যোগান রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৮২ কোটি টাকা নিজস্ব উৎস ও ৫ হাজার ৩১০ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে আসবে। ৎ
২০১৯-২০ অর্থবছরের অনুমোদিত এডিপি বিগত অর্থবছরের মূল এডিপির চেয়ে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ ও সংশোধিত এডিপির ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আগামি অর্থবছরের জন্য অনুমোদিত বরাদ্দ থেকে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহণ খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ২৬ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা বা ১২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে। শিক্ষা ও ধর্ম খাতের জন্য প্রায় ২১ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা বা ১০.৫৫ ভাগ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। পঞ্চম সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে প্রায় ১৭ ৫৪১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ জন্য। পরপর গ্রামীণ অর্থনীতি তথা পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৫ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে প্রায় ১৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ, কৃষি খাতে প্রায় ৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, পানি সম্পদ খাতে প্রায় ৫ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং জনপ্রশাসন খাতে ৫ হাজার ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক বরাদ্দে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগকে। বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১২ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ৯ হাজার ২৭০ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৮ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা, সেতু বিভাগের জন্য ৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য ৬ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, গেল এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে চলমান বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির সংশোধিত বরাদ্দের ৯৭ হাজার ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে, যা সংশোধিত এডিপির ৫৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসের এ ব্যয় গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৪ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে বাস্তবায়িত হয়েছিল ৮২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা বা ৫২ দশমিক ৪২ শতাংশ। নতুন অর্থবছরের জন্য এডিপির যে বরাদ্দ আজ অনুমোদন দেওয়া হলো তা দিয়ে মোট এক হাজার ৪৭৫টি প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেশনের যে নিজস্ব অর্থ বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে ৮৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সব মিলে নতুন অর্থবছরে সর্বমোট এক হাজার ৫৬৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, বৈঠকে আগামি অর্থবছরের এডিপির জন্য বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত মোট এক হাজার ৪৬টি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈদেশিক উৎস হতে অর্থ প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন ২৪২টি অননুমোদিত প্রকল্প, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য ৬২টি প্রকল্প, ২০১৯ সালের জুনে ২৭২টি প্রকল্পের মেয়াদোত্তীর্ণ, চলতি অর্থবছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু শেষ না হওয়ায় ৫৮টি প্রকল্প পুনঃঅন্তর্ভুক্তি এবং ২০২০ সালের জুনের মধ্যে ৩৫৫টি প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৯:০৫ ● ৩৯৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ