মনোনয়ন বঞ্চিতের ক্ষোভদুমকিতে আ‘লীগ নেতার রাজনীতিতে ইস্তেফা!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » মনোনয়ন বঞ্চিতের ক্ষোভদুমকিতে আ‘লীগ নেতার রাজনীতিতে ইস্তেফা!
শনিবার ● ১৭ জুন ২০২৩


দুমকিতে আ‘লীগ নেতার রাজনীতিতে ইস্তেফা!

দুমকি(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের মনোনয়ন বঞ্চিতের ক্ষোভে ৪৩বছরের আওয়ামী রাজনীতি থেকে ইস্তেফার ঘোষনা দিলেন পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলা আওয়ামীলীগের ১নং যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো: দেলোয়ার হোসেন মোল্লা। গতকাল শনিবার (১৭ জুন) সকালে তার নিজ গ্রামের বাড়িতে স্থানীয় কর্মী সমর্থকদের সামনে আয়োজিত জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় পদ-পদবি থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে তিনি প্রকাশ্যে রাজনীতি থেকে ইস্তেফার ঘোষনা দেন।
লিখিত বক্তব্যে দেলোয়ার হোসেন মোল্লা আক্ষেপ করে বলেন, আ‘লীগে হামলা, মামলা, জেল-জুলুম নির্যাতন ভোগের কোন মূল্যান নেই। নব্য-হাইব্রিডদের অবৈধ অর্থের কাছে আজ দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা অসহায়। আ‘লীগের পদ-পদবি যেখানে টাকায় বিক্রি হয়, সেই সংগঠনে আমার মতো নি:স্বার্থ ত্যাগী কর্মীদের রাজনীতি করার কোন সুযোগ নেই। পদে পদে লাঞ্চনা, গঞ্জনা, বঞ্চনা ও অপমান অপদন্ত হওয়ার চেয়ে আত্মসন্মান বাঁচাতে আগে ভাগেই সরে যাওয়া শ্রেয়। তাই আমি দুমকি উপজেলা আ‘লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তেফা দেয়ার ঘোষনা করছি। ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য গত ৪ জুন অনুষ্ঠিত তৃণমূলের প্যানেল তৈরীতে জেষ্ঠতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, তার নির্বাচনী মাঠের জনপ্রিয়তা এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করা হয়নি। অর্থের বিনিময়ে কনিষ্ঠ যুবলীগ নেতার নাম ১নম্বরে এবং তার  দেলোয়ার হোসেন মোল্লা) নাম ২নম্বরের তালিকায় দিয়ে তাকে সামাজিক ভাবে হেয় ও অসম্মান করা হয়েছে। অত্মসম্মান বোধের কারনেই তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতি থেকে চিরদিনের জন্য ইস্তেফা দিয়ে সাধারণ নাগরিক হিসেবে থাকতে চান। লেবুখালী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হবেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউনিয়নবাসী চাইলে অবশ্যই নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন।
এপ্রসঙ্গে দুমকি উপজেলা আ‘লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, মৌখিক ভাবে শুনেছি, এখনও পদত্যাগপত্র আমাদের হাতে পাইনি। এটা হয়ে থাকলে তা খুবই দু:খজনক। তবে মনোনয়নের বিষয়ে জেষ্ঠ্যতার বিষয়টি সংবিধানের কোথাও উল্লেখ নেই। এসব অভিযোগ তার মনগড়া। আমরা ইউনিয়ন কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভায় সমঝোতার মাধ্যমে প্যানেল তৈরী করে পাঠিয়েছি। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে আমার বা কারো কিছু বলার নেই।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, পদত্যাগের কোন কাগজপত্র পাইনি। মনোনয়নের ব্যাপারে দেলোয়ারের নাম সন্মানের সাথে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশপত্র ও দেয়া হয়েছিল। তিনি মনোনয়ন পাননি। এখানে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়। পদত্যাগ প্রশ্নের জবাবে বলেন, কেউ যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে তাকে তো আর জোড় করার কিছু নেই। মনোনয়ন না পাওয়ায় মনগড়া অভিযোগ করছেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১৭জুলাই পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলাধীণ ২নং লেবুখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৪ জুন লেবুখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রায়াত চেয়ারম্যানপুত্র উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: সিরাজুল ইসলাম তুহিনকে ১নম্বরে ও দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান পদের মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা আ‘লীগের ১নং যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো: দেলোয়ার হোসেন মোল্লাকে ২নম্বরে রেখে তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। গত ৯জুন সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তে প্রায়ত: ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম তুহিন দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন। এতে মনোনয়ন বঞ্চিতের ক্ষোভে তিনি দেলোয়ার মোল্লা রাজনীতি থেকে ইস্তেফার ঘোষনা দেন।

এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৩:৪৪ ● ১০৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ