সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন দরকার

প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় » সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন দরকার
শনিবার ● ১৯ জানুয়ারী ২০১৯


প্রতীকী ছবি

আইনগত বাধা কেটে যাওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পথ খুলে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নয়, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যই এটি একটি বড় খবর। প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ১৯৯০ সালের পর আর এ নির্বাচন হয়নি। গত বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় ডাকসু নির্বাচনের জন্য রায় দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করায় আদালত অবমাননার আবেদনও করা হয়েছিল। গত অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছয় মাসের স্থগিতাদেশ চায়। এরপর মার্চের মধ্যে নির্বাচনের কথা জানানো হয় আদালতে। দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রসংগঠনগুলো ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশও করে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে ডাকসু নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তার জন্য ১৫ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদও গঠন করা হয়েছে।
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের বছর যাত্রা শুরু করে ডাকসু। প্রথমে পরোক্ষ নির্বাচন হলেও স্বাধীনতার পর থেকে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-আন্দোলনসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে ডাকসুর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশেও বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ডাকসু। আজকের বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতাই একসময় ডাকসুর নেতৃত্বে ছিলেন। এককথায় বলা যেতে পারে, দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার ডাকসু। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও ডাকসু গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে। ডাকসু নেতাদের সাহসী ও বলিষ্ঠ উদ্যোগেই ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
দেশের ছাত্র নেতৃত্ব বিকাশে ডাকসুর ভূমিকা সব সময় ছিল ইতিবাচক। শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম কিংবা রাজনীতির চর্চা নয়, সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রেও ডাকসু সব সময় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। সঠিক নেতৃত্ব বিকশিত হয়েছে ডাকসুর মাধ্যমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চায় নেতৃত্ব দিয়েছে ডাকসু। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল সংসদে ছাত্র নেতৃত্ব গড়ে ওঠার এই সংস্কৃতি নতুন করে যে চালু হতে যাচ্ছে, তা দেশের ছাত্ররাজনীতির বিকাশে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচন অবিলম্বে দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। আজকের ছাত্র নেতৃত্ব যাতে আগামি দিনের নেতৃত্ব গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত হতে পারে তার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:২৩:০৫ ● ১১৮৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ