
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, গলাচিপা (পটুয়াখালী)
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে চলমান কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছে পটুয়াখালীর গলাচিপায়ও। সোমবার (১ ডিসেম্বর) বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও প্রাইমারীর সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে ছিলেন। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু না হলেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের কর্মচারীরা পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন।
সোমবার সকাল ১০টায় গলাচিপা শহরের পল্লী উন্নয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গলাচিপা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে দেখা যায়, প্রশ্নপত্র ও খাতা নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীরা পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করেন। সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় পরীক্ষার কক্ষে তাদের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তারা অফিসকক্ষে বসে কর্মবিরতি পালন করছিলেন। প্রধান শিক্ষকরা নিজেরা প্রশ্নপত্র বিতরণ করেন এবং কক্ষের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কর্মচারীদের দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় পরীক্ষার কক্ষে শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি, হৈচৈ এবং অনেককে প্রশ্ন বুঝতে না পেরে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়।
পল্লী উন্নয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহারুল ইসলাম সাগরকন্যাকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ১০ম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন করছি। ঢাকায় সহকর্মীদের ওপর হামলার পর সারাদেশে কর্মবিরতি চলছে। ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন, বেতনভাতা সমন্বয় ও পদোন্নতিসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে।
ছাত্রঅভিভাবক রুমা আক্তার বলেন, শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক হতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন করা ঠিক নয়। শিশুরা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। পরীক্ষা না হলে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়বে।
গলাচিপা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. মরিয়ম আক্তার বলেন, সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। বাধ্য হয়ে আমাদের পরীক্ষা নিতে হচ্ছে, তবে একা পরীক্ষা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
এদিকে, পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গলাচিপা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম সগীর। তিনি বলেন, উপজেলায় ১৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সবগুলোতেই যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
গলাচিপা উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৯৬টি। সহকারী শিক্ষক রয়েছেন ৯১৫ জন এবং শিক্ষার্থী প্রায় ২৮ হাজার। সহকারী শিক্ষকদের দাবি- ১৩তম গ্রেড থেকে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার আশ্বাস বাস্তবায়ন, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দূরীকরণ এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।