
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, ছাতক (সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মো. আওলাদ হোসেনকে দুর্নীতি ও নাশকতার মামলায় ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতেই ছাতক উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (২৬ সেপ্টেম্বর) তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে সোপর্দ করা হয় বলে জানিয়েছেন ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান।
জানা যায়, আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে। এর আগেও তিনি এ ধরনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেছেন। তবে এবার গ্রেপ্তারের পেছনে ঘুষ গ্রহণ, সরকারি প্রকল্পের অর্থ ও খাদ্যশস্য আত্মসাৎসহ বিস্তর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সাধারণ সদস্য ও ৩ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য একযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রে ২০২৩-২৫ অর্থবছরের বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়। চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন নাগরিক সনদ, জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সরকারি সেবার বিনিময়ে নিয়মিত ঘুষ আদায় করতেন। গরিবদের জন্য বরাদ্দকৃত টিন, নলকূপ, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণেও ছিল ব্যাপক অনিয়ম। আওলাদ হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
ইউনিয়ন সদস্যদের দাবি, এক সময় বেসরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা আওলাদ হোসেন ২০১১ সালে নৌকা প্রতীকে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৫ বছরের ব্যবধানে তিনি শূন্য থেকে কোটিপতি বনে যান। সিলেট শহরের আখালিয়ায় রয়েছে ‘আব্দুল মান্নান ভিলা’ নামে বিলাসবহুল বাড়ি, গ্রামের বাড়িতে দুটি প্রাসাদসম ভবন, প্রায় ৩০ একর জমি এবং সন্তানকে বিদেশে পাঠাতে খরচ করা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। অভিযোগে তার বিরুদ্ধে লন্ডনে অর্থ পাচারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এই দুর্নীতির ঘটনায় চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে সাবেক ইউনিয়ন সচিব জীতেন দাস, সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এবং স্থানীয় যুবলীগ নেতা শিব্বির আহমদের নামও অভিযোগে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ওসি শফিকুল ইসলাম খান বলেন, নিয়মিত মামলার আসামি হিসেবে আওলাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এএমএল/এমআর