
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)
আষাঢ়-শ্রাবণের বর্ষায় প্রতিদিনই চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি আর কখনো মুষলধারে ঝরছে বৃষ্টিধারা। এরই ফাঁকে রোদের তেজও কম নয়। ফলে বর্ষাকালের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে ছাতা। আর সেই ছাতাই যেন ব্যস্ত করে তুলেছে আগৈলঝাড়ার পুরনো পেশাজীবীদের।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছাতার মেরামত কারিগর জলিল মুন্সী এখন ভীষণ ব্যস্ত। যাদের ছাতা পুরনো হয়ে গেছে, তারা ছুটছেন মেরামতের জন্য। কেউ কেউ নতুন ছাতা কিনছেন। দোকানগুলোতেও বেড়েছে বিক্রি। শিশুদের জন্য রয়েছে বাহারি রঙ ও নকশার ছাতা। শহর থেকে গ্রাম- সব জায়গায় ছাতার চাহিদা তুঙ্গে।
জলিল মুন্সী জানান, ৩০ বছর ধরে ছাতা ও তালা-চাবি মেরামতের কাজ করছি। এখন বর্ষা মৌসুম, তাই কাজের চাপ বেশি। প্রতিদিন ৪-৫শ’ টাকা আয় হয়। এই কাজ করেই সংসার চলে।
আরেক কারিগর আ. মান্নান বলেন, বছরের অন্য সময় কাজ কম থাকে। তবে বর্ষায় ছাতা, তালা ও লাইট মেরামতের চাপ বেড়ে যায়। কিন্তু যন্ত্রাংশের দাম বাড়লেও মজুরি বাড়ছে না। ছাতার কাপড়, হাতল, স্প্রিং, কামান- সবই এখন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
সাধারণ মানুষও ছাতার গুরুত্ব টের পাচ্ছেন। উপজেলার বাসিন্দা মো. সৈয়দ তালুকদার বলেন, ঘরে দু’টি ছাতা নষ্ট হয়ে ছিল। রোদে-বৃষ্টিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই মেরামত করালাম। ৮০ টাকা খরচ হয়েছে। নতুন ছাতা কিনতে গেলে ৫-৬শ’ টাকা লাগতো।
ছাতা কিনতে আসা চাকরিজীবী আরমান হোসেন বলেন, একটি মেয়ে কলেজে, ছেলে স্কুলে পড়ে। এখন তো রোদ-বৃষ্টির সময়। তাই ১,১০০ টাকায় দু’টি ছাতা কিনেছি।
আগৈলঝাড়ায় বর্ষা মানেই ছাতার কদর। এই সময়টায় যেমন ছাতা বিক্রি বাড়ে, তেমনি ব্যস্ত হয়ে ওঠেন কারিগররাও। তাদের জন্য এই মৌসুম জীবিকা নির্বাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে ওঠে।