
কুয়াকাটার মতো একটি পর্যটন নগরীতে আবাসিক হোটেলে জুয়ার আসর বসানো এবং তাতে একজন সদ্য সাবেক ইউপি সদস্যের জড়িত থাকার ঘটনা নিঃসন্দেহে গভীর উদ্বেগজনক। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির শৈথিল্য নয়, বরং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের একটি উৎকট নিদর্শন।
জানা গেছে, মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের প্রভাবশালী সাবেক ইউপি সদস্য ইউসুফ কোম্পানীসহ পাঁচজন জুয়ারীকে পুলিশ হাতেনাতে আটক করেছে। আবাসিক হোটেল সুপারস্টার-এ দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মকাণ্ড চলছিল বলে পুলিশের দাবি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, জনপ্রতিনিধির আসন থেকে সদ্য বিদায়ী একজন ব্যক্তি এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছেন।
জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি পারিবারিক বন্ধন বিনষ্ট করে, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটায় এবং অপরাধপ্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। কুয়াকাটার মতো পর্যটনকেন্দ্রিক এলাকায় যদি এমন অবৈধ কার্যক্রম চলতে থাকে, তাহলে তা পর্যটনের ভাবমূর্তি এবং স্থানীয় অর্থনীতির ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলেই আমরা মনে করি।
এক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও হোটেল কর্তৃপক্ষের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রশ্নের জন্ম দেয়। তারা যদি দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সহযোগিতা করে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির মাধ্যমে এসব হোটেল ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই—জুয়াসহ সব ধরনের অসামাজিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করা হোক। একইসঙ্গে জনপ্রতিনিধি বা প্রভাবশালী কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে অন্যরা সাবধান হয়।
সমাজকে সুস্থ, নৈতিক ও নিরাপদ রাখতে শুধু আইন প্রয়োগ নয়, প্রয়োজন সচেতন নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণও। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগেই কেবল এ ধরনের ব্যাধির প্রতিকার সম্ভব।
– সাগরকন্যা সম্পাদকীয় বিভাগ