বাসে নার্সকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, চালক-হেলপার গ্রেফতার

প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » বাসে নার্সকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, চালক-হেলপার গ্রেফতার
মঙ্গলবার ● ৭ মে ২০১৯


বাসে নার্সকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে স্বর্ণলতা নামের যাত্রীবাহী একটি বাসে এক নার্সকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নাম শাহিনুর আক্তার তানিয়া (২৪)। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বাসটির চালক নূরুজ্জামান (৩৯), হেলপার লালন মিয়াকে (৩৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত তানিয়া কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, শাহিনুর আক্তার (তানিয়া) ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের নার্স ছিলেন।  সোমবার বিকেলে তিনি এয়ারপোর্ট কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়ে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি মহাখালী-থেকে কটিয়াদী হয়ে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চলাচল করে। পিরিজপুর থেকে তানিয়ার বাড়ি ১০ মিনটের পথ। বিকেলে বাসে উঠার পর থেকে তার বাবা ও ভাইদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বেশ কয়েক বার কথা বলেন তানিয়া। রাত ৮টার দিকে বাসটি মঠখোলা বাজার অতিক্রমের সময় বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হয় তার। এ সময় আধা ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি পৌঁছাবেন বলে জানান তিনি। এরপর রাত সাড়ে আটটার দিকে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছানোর পর ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন তানিয়া। পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে পিরিজপুর পৌঁছাবেন বলে তখন জানান তিনি। এরপর কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে বাসের সব যাত্রী নেমে যায়। গাড়ির চালক ও হেলপার কৌশলে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড থেকে চার-পাঁচজনকে যাত্রীবেশে বাসে তোলেন। এরপর কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড পার হয়ে দুই কিলোমিটার দূরের ভৈবর-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া-জামতলী এলাকায় নির্জন জায়গায় নিয়ে তানিয়াকে গণধর্ষণ করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
ধর্ষণকারীরা রাত পৌনে ১১টার দিকে তানিয়ার লাশ কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায়। এদিকে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও বাসটি পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ডে না পৌঁছানোয় তানিয়ার ভাই তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর গভীর রাতে খবর পেয়ে কটিয়াদী হাসপাতালে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
তানিয়ার ভাই কফিল উদ্দিন সুমন জানান, তার বোনের সঙ্গে একটি এলইডি ১৯ ইঞ্চি টেলিভিশন, একটি স্যামসং এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ও বেতনের ১৫-১৬ হাজার টাকা ছিল।
হাসপাতাল রেজিস্ট্রার খাতায় উল্লেখ আছে, তানিয়াকে হাসপাতালে আনা ব্যক্তির নাম আল আমিন, বাবা ওয়াহিদুজ্জামান, গ্রাম ভেঙ্গারদি, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
কটিয়াদীতে থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ওই বাসের চালক নূরুজ্জামান ও হেলপার লালন মিয়াকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে শাহিনুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ব্যাগ ও কাপড়চোপড়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বিস্তারিত প্রতিবেদন চাওয়া হবে। তবে তার হাত, মুখ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৩:৫৪ ● ৪৪১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ