বরিশাল সাগরকন্যা অফিস ॥
মেয়ে জামাতা ও তার পরিবারের দাবিকৃত ইজিবাইক ক্রয় করে দিতে অস্বীকার করায় জামাতার হাতে লাঞ্ছিত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন শ্বশুর গফুর সরদার (৬০)। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মেয়ে জামাতা, শ্বশুর, শাশুড়িসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের। মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের মেঝ ভাই ও মামলার বাদি জামাল সরদার মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মামলায় মেয়ে জামাতা তাওহীদ হাওলাদার, তার বাবা মোক্তার হাওলাদার, মা সুরাতোন নেছা, ছোট ভাই সলেমান হাওলাদারকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এজাহারে জানা গেছে, কমলাপুর গ্রামে গফুর সরদারের কন্যা তামান্না আক্তার (১৮) প্রেমের টানে গত সাড়ে তিনমাস পূর্বে প্রতিবেশি মোক্তার হাওলাদারের পুত্র তাওহীদ হাওলাদারের সাথে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। পাশ্ববর্তী কালকিনি উপজেলায় ওই প্রেমিক যুগল আটক হলে উভয় পরিবারের অভিভাবকের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে মেয়ে জামাতা তাওহীদ তার শ্বশুর গফুরের কাছে যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছিলো। টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ২৪ এপ্রিল সকালে মেয়ে জামাতা তাওহীদ তার শ্বশুরকে লাঞ্ছিত করে। এ নিয়ে ওইদিন রাতে অনুষ্ঠিত গ্রাম্যসালিশ বৈঠকে মেয়ে জামাতা ও তার পরিবারের লোকজনে একটি নতুন ইজিবাইক কিনে দেয়ার জন্য গফুর সরদারকে চাঁপ প্রয়োগ করে। ইজিবাইক কিনে দিতে অস্বীকার করায় ২৫ এপ্রিল সকালে মেয়ে জামাতা তাওহীদ তার শ্বশুরকে জুতা পেটা করে। এ অপমান সইতে না পেরে ওইদিন বিকেলে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে গফুর কীটনাশক পান করে। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাতে গফুর সরদার মারা যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার এসআই মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, গফুরের মৃত্যুর পর থেকে তাওহীদ ও তার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করেছে। তিনি আরও জানান, গত সোমবার রাতে মামলা দায়েরের পর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য তাদের অভিযান চলছে।
এফএন/কেএস