চাহিদা অনুপাতে এলএনজি সরবরাহ না বাড়ায় কাটছে না গ্যাস সংকট

প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » চাহিদা অনুপাতে এলএনজি সরবরাহ না বাড়ায় কাটছে না গ্যাস সংকট
মঙ্গলবার ● ২২ জানুয়ারী ২০১৯


---

সাগরকন্যা এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট॥
চাহিদা অনুপাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং আগের চেয়ে বর্তমানে এলএনজি সরবরাহ কমে যাওয়ায় শিল্প-কারখানায় নতুন করে আবার গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের অনেক শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ছে আবাসিক গ্রাহকদেও ভোগান্তি। এমনকি সরবরাহ কমে যাওয়ায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে  শিকলবাহায় ২২৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত কয়েকদিন ধরেই চট্টগ্রামে গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে। আবাসিক গ্রাহকদের দিনের বেলায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রান্নার চুলা জ্বলছে মিটমিট করে। সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও শিল্প কারখানায় গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। শীতে এমনিতে আবাসিকে গ্যাসের ব্যবহার স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেড়ে যায়। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্যাস ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আর শিল্পে যারা নতুন সংযোগ নিয়েছেন, তারাও সমস্যায় পড়েছেন। বর্তমানে আবাসিকে গ্যাসের নতুন সংযোগ প্রদান বন্ধ থাকলেও শিল্প-কারখানায় নতুন সংযোগ দেয়া হচ্ছে। ফলে গ্যাসের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ না বাড়ায় গ্যাস সংকট কাটছে না।
সূত্র জানায়,  চট্টগ্রামে সরবরাহকৃত গ্যাসের অধিকাংশই কাফকো ও সিইউএফএল সার কারখানায় বরাদ্দ দেয়া হয়। বর্তমানে কাফকো ও সিইউএফএলে দৈনিক ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। আর রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিটে দৈনিক ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট দেয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পাওয়া বাকি গ্যাস শিল্প-কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও আবাসিকে সরবরাহ করা হচ্ছে। গত ১৮ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশে ৩ জাহাজ এলএনজি আনা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থ জাহাজ এলএনজি দেশে আসার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্টাদের মতে, তখন সরবরাহ বাড়ানো হতে পারে। মহেশখালীতে স্থাপিত এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু দৈনিক ৩০০ থেকে ৩৩০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রামে গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট রয়েছে। তার মধ্যে শিকলবাহায় অবস্থিত ২২৫, ১৫০ ও ৬০ মেগাওয়াটের ৩টি ইউনিট এবং রাউজানে অবস্থিত ৪২০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট রয়েছে। বর্তমানে গ্যাস দিয়ে রাউজানের একটি ইউনিট চালু রয়েছে। তার মধ্যে ২২৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডুয়েল-ফুয়েলের ব্যবস্থা রয়েছে।
এদিকে শিল্পে গ্যাস সংযোগ চালু হওয়ার পর চট্টগ্রামে ৬৭৬টি শিল্প কারখানায় গ্যাস সংযোগ প্রদানের জন্য গঠিত কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। তার মধ্যে অনেকেই সংযোগের জন্য চাহিদাপত্রের ফি পরিশোধ করেছে। যারা ফি পরিশোধ করেছে তাদের অনেকেই গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমেদ মজুমদার জানান, বর্তমানে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির নেটওয়ার্কের সক্ষমতা কম। দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি চাহিদা রয়েছে। গ্যাস নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তারপর গ্রাহকদের চাহিদা অনুপাতে গ্যাস সরবরাহ দেয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ৮:১১:১৫ ● ৫১৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ