চূড়ান্ত নির্দেশেও সরকারি আবাস ছাড়ছে না সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা

প্রথম পাতা » জাতীয় » চূড়ান্ত নির্দেশেও সরকারি আবাস ছাড়ছে না সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা
বৃহস্পতিবার ● ২১ মার্চ ২০১৯


ফাইল ছবি
ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
বর্তমান সরকারের অনেক নতুন মন্ত্রী-এমপি সরকারি আবাসে থাকতে পারছে না। কারণ সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা নতুনদের বরাদ্দ দেয়া আবাস ছাড়ছেন না। একাধিক নোটিশ দেয়া হলেও অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপি নির্বিকার। নতুন সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা মন্ত্রিপাড়ায় বাসা বরাদ্দ পেলেও আগের সংসদে বরাদ্দ পাওয়া এমপি হোস্টেলের বাসা এখনো দখলে রেখেছেন। এমন অবস্থায় চলতি মাসের মধ্যে সাবেকদের এমপি হোস্টেল খালি করতে চূড়ান্ত নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদ সচিবালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি সংসদের সংসদ কমিটি গঠনের আগেই সাবেক এমপিদের আবাস খালি করার নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তারপর সংসদ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও সাবেক এমপি ও বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা বারবার সময় নিচ্ছেন। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ন্যাম ফ্ল্যাটের ৬টি ও নাখালপাড়ায় পুরনো এমপি হোস্টেলের ৪টি ভবন আইন প্রণেতাদের আবাসস্থল ‘এমপি হোস্টেল’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেখানে ছোট-বড় দুই ধরনের ফ্ল্যাট রয়েছে। তার মধ্যে প্রথমবার নির্বাচিতদের এক হাজার ২৫০ বর্গফুট ও একাধিকবার নির্বাচিতদের এক হাজার ৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়। চলতি সংসদে এখন পর্যন্ত নতুন ও পুরনো মিলে ১৬৫ জনকে লটারির মাধ্যমে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সাধারণ ও সংরক্ষিত আসন মিলিয়ে ৩৫০ জন এমপির জন্য মানিক মিয়া এভিনিউতে ২১৬টি ও নাখালপাড়ায় ৯১টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তাছাড়া রাজধানীর মন্ত্রিপাড়ায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের জন্য পৃথক আবাসনব্যবস্থা রয়েছে।

সূত্র জানায়, গত বছর ৩৫০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৯২ জনকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু তাদের অনেকেই বরাদ্দ নিয়েও ফ্ল্যাটে থাকেননি। সংসদ সদস্যদের আবাসনের বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংসদ কমিটির গত আগস্ট মাসের বৈঠকে এমপি হোস্টেলে থাকেন না এমন এমপিদের বাসা ছেড়ে দিতে বলা হয়। একাদশ সংসদের নতুন সদস্যদের জন্য বাসা খালি করার জন্য ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারপর ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে প্রার্থী না হতে পারায় জানুয়ারিতে অনেকেই ওসব ভবনে থাকার অধিকার হারান। আর নির্বাচিত না হতে পারায় সাবেক এমপিদের বাসা ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও তাদের অনেকেই এখনো বাসা ছাড়েননি। ইতিমধ্যে নতুন সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা মন্ত্রিপাড়ায় বাসা বরাদ্দ পাওয়ারও এখনো এমপি হোস্টেলের বাসা ছাড়েননি। এমন অবস্থায় বাসা খালি করা ও নতুনদের বাসা বরাদ্দ দেয়া নিয়ে সংসদ সচিবালয় রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন।

সূত্র আরো জানায়, বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের এমপি হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া আবাস খালি করে বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো তা দেয়া হয়নি। অনেকেই টেলিফোনে কয়েক দিন সময় নিয়েছেন। তবে লিখিতভাবে কেউ কিছু জানাননি। যদিও সংসদ সচিবালয় থেকে চিঠি দিয়ে সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বলা হয়েছে-ইতিপূর্বে বরাদ্দকৃত মানিক মিয়া এভিনিউ/নাখালপাড়াস্থ ফ্ল্যাটে বসবাস করতে আগ্রহী হলে সরকার থেকে প্রাপ্য নির্ধারিত বাড়িভাড়ার মন্ত্রীদের জন্য ৮০ হাজার টাকা এবং প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রীদের জন্য ৭০ হাজার টাকার সম্পূর্ণ অংশ সংসদ সদস্য ভবনের ফ্ল্যাটের ভাড়া বাবদ পরিশোধ করার শর্তে আবেদন করতে হবে।

এ বিষয়ে সংসদ কমিটির সভাপতি ও প্রধান হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী লিটন জানান, সাবেক এমপিদের এমপি হোস্টেলের বাসা দ্রুত ছাড়তে বলা হয়েছে। আর মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের অনেকে মন্ত্রিপাড়ার বাসায় ওঠার জন্য একটু সময় নিয়েছেন। কারণ পুরনোরা বাসা ছাড়ার পর সেখানে কিছু সংস্কারকাজ থাকে। সেগুলো শেষ হলেই তারা এমপি হোস্টেল ছেড়ে দেবেন আশা করছি। আর কেউ সরকারের বরাদ্দ বাসাভাড়ার টাকা পরিশোধ করলে তাদের নতুন করে বরাদ্দ দেয়া হবে।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৫:৫৭ ● ৭১৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ