জেলেদের টাকা বিতরণ তালতলীতে উপজেলা চেয়ারম্যান-ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধ!

প্রথম পাতা » বরগুনা » জেলেদের টাকা বিতরণ তালতলীতে উপজেলা চেয়ারম্যান-ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধ!
বুধবার ● ১৩ মার্চ ২০১৯


---

বরগুনা সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার তালতলী উপজেলার জয়ালভাঙ্গা গ্রামে ৩৮০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯ জেলেদের ক্ষতিপূরনের টাকা নিশানবাড়ীয়া ইউপি  চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন (!) এ সংবাদ জানাজানি হলে জেলেদের টাকা উদ্ধারের জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবি উল কবির জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যায়। এ খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যার (বহিস্কৃত) ও যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টু দুলাল ফরাজীর পক্ষ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সাথে বির্তকে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মিন্টু নিজের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গুলি করতে উদ্ধত হয়। এ সময় দুই ভাইয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ মিন্টুকে নিভৃত করে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রনে নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শি জানান, তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক ছোটবগী ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনু বুধবার দুপুরে পৃথকভাবে তালতলী নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের জয়ালভাংগা গ্রামে নির্মানাধীন ৩৮০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের  ক্ষতিপূরনের টাকা নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরনের টাকা উদ্ধারের জন্য যায়। এ সময় তালতলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান (বহিস্কৃত) মনিরুজ্জামান মিন্টু ও নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যার দুলাল ফরাজী টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার ও তার ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে বড় ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান (বহিস্কৃত) মনিরুজ্জামান মিন্টু পুলিশের উপস্থিতে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেয় বলে তনু জানান। এ ঘটনায় স্থানীয় জেলেরা আতংকিত হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরনের টাকা দেওয়া পন্ড হয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে, গত বছর নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যার দুলাল ফরাজী তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে পিস্তলের বাট দিয়ে হামলা করেছিল। এরপর থেকে এদের মধ্যে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে। যা তালতলীর উপজেলার সর্বত্র জনসাধারণের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দারকে নিয়ে ৩৮০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯ জন জেলের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ উত্তোলণ করে জেলেদের ক্ষতিপূরনের টাকা আত্মসাৎকারী চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীর কাছ থেকে উদ্ধার করে জেলেদের মাঝে বিতরন করতে গেলে আমার বড় ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান (বহিস্কৃত) মনিরুজ্জামান মিন্টু ও নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে তিনি (মিন্টু) আমাকে ও সভাপতিকে পুলিশের উপস্থিতে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকী দেয়।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার বলেন, জেলেদের টাকা উদ্ধার করতে গেলে এতে বহিস্কৃত উপজেলা চেয়ারম্যান ভুমিদস্যু সন্ত্রাসী মনিরুজ্জামান মিন্টু আমাকে ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে পিস্তল দিয়ে গুলি করতে উদ্ধত হয়। তিনি আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার আরও বলেন, মিন্টুর নামে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীসহ একডজন মামলা রয়েছে।
নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী টাকা আত্মসাতের কথা অস্বীকার করে বলেন, তারা ভাই ভাই বাক বিতন্ডা করেছেন। এখানে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
তালতলী থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার এবং সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার সামনে পিস্তল তাক করার কোন ঘটনা ঘটেনি। এ  ব্যাপারে কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি।
বহিস্কৃত উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু এ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৫:২১ ● ৫৩৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ