কুয়াকাটা ক্লাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ!

প্রথম পাতা » কুয়াকাটা » কুয়াকাটা ক্লাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ!
বৃহস্পতিবার ● ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২


কুয়াকাটা ক্লাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ!

পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

এবার পদত্যাগী সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, জমিক্রয়ে অস্বচ্ছতা, সাংগঠনিক কাজে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ক্লাব লিমিটেডে’র প্রেসিডেন্ট ওহিদুজ্জামান সোহেল। স্বেচ্ছাচারিতায় বাধাঁসহ আর্থিক অনিয়ম দৃশ্যমান হওয়ায় নিজেদের বাঁচাতে আপপ্রচারে নেমেছে সাধারন সম্পাদকসহ একটি গ্রুপ। এদিকে ক্লাবের নীতি নির্ধারকদের এমন অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে বিপাকে পড়েছে সাধারন সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ওহিদুজ্জামান সোহেল জানান, ক্লাব’র জমিক্রয়ের একক সিদ্ধান্ত ছিল সাধারন সম্পাদক রুমান ইমতিয়াজ তুষারের। কার্য্যনির্বাহী কমিটি জমিসংক্রান্ত সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে কুয়াকাটা উন্নয়ণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ভূমির মালিকগনকে নব্বই লক্ষ টাকা প্রদান পূর্বক রেজিষ্ট্রি বায়না দলিল সম্পন্ন করে। কিন্তু আর্থিক সুবিধা গ্রহনের স্বার্থে জমির মালিকগনকে ক্লাব থেকে টাকা পাইয়ে দেয়ার নিশ্চয়তায় তার স্বাক্ষরিত নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইলিশ পার্ক এন্ড রিসোর্ট’র দুইখানা চেক আল আমিন মুসল্লীকে প্রদান করেন। এছাড়াও কুয়াকাটা ক্লাব’র ভবনের ডিজাইন প্লান খরচ বাবদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ক্লাবের ব্যাংক একাউন্ট থেকে নিজে গ্রহণ করে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে বিল পরিশোধ করেছেন দুই লক্ষ টাকা। বাকী দেড় লক্ষ টাকা তাহার পকেটে গচ্ছিত থাকলেও ডিজাইন প্লান এখনো বুঝে পায়নি ক্লাব।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, রুমান ইমতিয়াজ তুষার সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন ১১টি চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন তারিখে ক্লাবের ব্যাংক একাউন্ট থেকে দশ লক্ষ সত্তুর হাজার টাকা উত্তোলন করে নিজে খরচ করেছেন। যার কোন সঠিক হিসাব বিবরনী ক্লাব ফাইন্যান্স সেক্রেটারীর নিকট জমা প্রদান করেননি। এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দিলে হিসাব প্রদান না করে দুর্ব্যবহার করেন। উপরোন্ত কার্য্যনির্বাহী কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল পদ থেকে মার্চ মাসের ৫ তারিখে পদত্যাগ করেন। কার্য্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক কয়েক দফা নোটিশ প্রদান করা হলেও কোন জবাব প্রদান না করে ক্লাবের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সোস্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, রুমান ইমতিয়াজ তুষারের ভূলের কারনে ক্লাবের মূল্যবান আসবাবপত্র, প্রিন্টিং স্টেশনারী নষ্টসহ অপ্রয়োজনীয় মাল এয়ের ফলে ক্লাব আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি খেয়াল খুশিমত কার্য্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত এবং প্রেসিডেন্ট’র অনুমতি ছাড়া কার্যক্রম পরিচালনার কারনে কার্য্যনির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্যদের সাথে মতবিরোধ দেখা দেয়।
তিনি দাবী করেন, মেম্বারশীপ আবেদন ফরম যাথাযথ পুরণ পূর্বক মেম্বারশীপ ফি ব্যাংকে জমাদানের রিসিট ক্লাব অফিস প্রাপ্তি সাপেক্ষে মানি রিসিট প্রদান করা হয়। এখানে অনিয়মের কোন আশ্রয় নেয়া হয়নি। কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুল হাসান বেসিক ব্যাংক, মহিপুর শাখা থেকে চেক নং ৪৪৬৮৮০৮ এর মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা নিলেও তার কোন হিসাব ক্লাব ফাইন্যান্স সেক্রেটারীর নিকট প্রদান করেনি। এছাড়াও ক্লাব সদস্য পৌর যুবদল সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরন, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নেছার উদ্দীন ক্লাব অফিসে নিয়মিত রাজনীতি কর্মকান্ড পরিচালনা করার অপচেষ্টা চালায়। এতে বাঁধা দিলে ক্লাবের অন্যান্য কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে।
উল্ল্যেখ, শনিবার (১০ সেপ্টম্বর) দুপুরে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সদস্য জহিরুল ইসলাম মিরন, নেছার উদ্দিন হাওলাদার ও সাইদুর রহমান সবুজ উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্যে লুৎফুল হাসান রানা বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্নে সদস্য প্রতি ৩ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়ে নিজস্ব ভবনের জন্য ৪ একর ৬০ শতাংশ জমি বায়না করা হয়। গত ৩ বছরে শতাধিক সদস্য অর্ন্তভূক্ত হয়। এসব সদস্য প্রতি ১ লাখ টাকা করে নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তাদের ‘রিকগনিশন’ বা অর্থ সংগ্রহের ‘রিসিট’ দেয়নি ক্লাব প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল।
সংবাদ সম্মেলনে লুৎফুল হাসান রানা দাবী করেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন মুসুল্লী, অর্থ সম্পাদক মিজানুর  রহমানসহ কয়েকজন সদস্য নিয়ে সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল নিজেদের খেয়াল খুশি মত ক্লাবটি পরিচালিত করছে। সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে একটি রেজুলেশন তৈরি করে ক্লাবের নামে পরিচালিত অগ্রনী ব্যাংক কুয়াকাটা শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংক কুয়াকাটা শাখা, বেসিক ব্যাংক মহিপুর শাখা থেকে সব টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ এর পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। কুয়াকাটা অফিস বন্ধ করে এখন ঢাকায় অফিস নিয়ে কুয়াকাটা ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্ম করছেন। বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) ক্লাবের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিকাশ উপাস্থাপন করেনা।
এই সংবাদ সম্মেলনের একদিন আগে বৃহস্পতিবার কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কুয়াকাটা ক্লাব লিমিটেড’র জমির অমমোক্তার মালিকানা দাবী করে আবুল কালাম ও গাজী আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রুমান ইমতিয়াজ তুয়ারের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেস্টা করা হলে নম্বর বন্ধ থাকায় কথা বলা যায়নি।

জেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৩:২৭ ● ২১৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ