দশমিনায় ১৫ আশ্রয়ন প্রকল্পে ৭শ’ ২২টি পরিবারের মানবেতর জীবন

প্রথম পাতা » সর্বশেষ » দশমিনায় ১৫ আশ্রয়ন প্রকল্পে ৭শ’ ২২টি পরিবারের মানবেতর জীবন
শুক্রবার ● ১৮ জানুয়ারী ২০১৯


---

দশমিনা (পটুয়াখালী) থেকে সঞ্জয় ব্যানার্জী॥
আদর্শ গ্রাম, গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রায়ন প্রকল্প । এক এক সরকার ভিন্ন নামে দুস্থ অসহায় ও নদী ভাঙ্গনের শিকার হওয়া সর্বহারা মানুষদের আশ্রয় দিয়েছেন। এসব আশ্রিতরা ঘর পেলেও জীবন ধারনের আর কিছুই জুটেনি তাদের কপালে। আবার ঘরগুলো সংস্কারের অভাবে বসবাস অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে । এমনকি জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেকে শ্রম বিকাতে পরিবার পরিজন নিয়ে চলে গেছে । পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ২টি আশ্রয় প্রকল্প ঘুরে এ রকমই চিএ পাওয়া গেছে ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে ১৫টি আশ্রয়ন প্রকল্প, আদর্শ ও গুচ্ছ গ্রাম রয়েছে। এসব আশ্রয়নে অসহায় দুস্থ্য ৭শ’ ২২টি পরিবার বসবাস করে আসছিল। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্পটি নদীর গর্ভে বিলীন, বহরমপুর ইউনিয়নে কোন আশ্রয়ন প্রকল্প নেই।  উপজেলা সদর থেকে সাড়ে ৩ কিঃ মিঃ  পশ্চিম দক্ষিনে অবস্থিত নিজাবাদ-লক্ষীপুর আশ্রয়ন প্রকল্প । ২০০৪ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক নির্মান করা হয় এটি। ৪টি ব্যারাকে ৪০টি পরিবারকে আশ্রয় দেয় সরকার । নির্মানের পর থেকে অদ্যবধি সরকারি তরফ থেকে কোন মেরামত করা হয়নি। কাজের সন্ধানে জীবন  রক্ষার্থে ইতিমধ্যে ৩৭টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। স্থাপিত গভীর নলকুপ ও স্যানিট্রেশনগুলো অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পর বসবাসরত আঃ সালাম-আয়সা, মোস্তফা-হেলেনা দম্পতির সাথে কথা হয় । তারা বলেন, সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু আমাগো কোন ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। ভাঙ্গাচোড়া ছোট ঘরে কোন রকম তালিতুলি দিয়ে থাকতে হয় আমাগো। তারা আরও বলেন, সরকার ঘর দিলেও জীবন ধারনের কোন ব্যবস্থ্য গ্রহন করেনি। বর্তমান সরকারের কাছে  দাবি সরকার যেন আমাগোরে কাজ দেয়, যা দিয়ে, বেঁচে থাকতে পারি। বসবাসরত ৩ টি পরিবারে  মোঃ নজিরের-৮জন, সালামের-৮জন ও মোস্তফার-৬জনসহ মোট ২২জন লোক রয়েছে । উপজেলা সদর থেকে সাড়ে ৫ কিঃ মিঃ দক্ষিন পূর্বে সৈয়দ জাফর আদর্শ কিনারা গ্রামের অবস্থান । ওখানেও ৩০টি পরিবারকে দেয়া হয় ঘর। বসবাসরতদের মধ্যে অধিকাংশ জেলে । তিন সরকার ঘুরে বসবাসরতদের স্থায়ী ঠিকানা মিলে এ আদর্শ গ্রামে। আদর্শ গ্রামের মোকলেচ সিকদার, মোস্তাফা , রওশন আলী ও মকবুল বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে মাটির, বিএনপি’র আমলে ঘর নির্মান এবং আ’লীগ আমলে ঘরের দলিল হস্তান্তর। দীর্ঘ ২৮বছরে আমাগো কেউ খোজ-খবর নেয়নি । শুধু ভোটের সময় এলে ভোট চায়। আশ্রিয়দের মধ্যে অধিকাংশ জেলে পরিবার। প্রায় দু’শতাধিক লোকের বসবাস। বসতিদের মধ্যে ইতিপূর্বে ৮টি পরিবার ঢাকায় চলে গেছে । এসব আশ্রিয়তদের দাবী বর্তমান সরকার যেন তাদের ঘর মেরামত করে দেয় এবং সুদবিহীন  ঋণ দিয়ে যেন জাল নৌকা করতে পারে। দশমিনা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, আমার ইউনিয়নে আশ্রয়ন প্রকল্পগুলোর করুন অবস্থা। সামনে উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন সভায় এ বিষয় তুলে ধরা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভ্রা দাস বলেন, আমি কয়েকটি আদর্শ ও গুচ্ছ গ্রাম এবং  আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে করুন  অবস্থা দেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়সহ ত্রাণ ও পূনর্বাসন মন্ত্রণালয় সংস্কারের জন্য লিখিতভাবে অবহিত করেছি, আমি আশা করি অতি শীঘ্রই সংস্কারের বরাদ্দ পাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫১:৩৮ ● ১০০৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ