বৃহস্পতিবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

৭৬ ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নেই, ধার করা ছাত্রে পরীক্ষা

হোম পেজ » বরগুনা » ৭৬ ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নেই, ধার করা ছাত্রে পরীক্ষা
বৃহস্পতিবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৫


৭৬ ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নেই, ধার করা ছাত্র এনে পরীক্ষা

সাগরকন্যা প্রতিবেদক, আমতলী (বরগুনা)
আমতলী উপজেলার অনুদানপ্রাপ্ত পাঁচটিসহ ৭৬টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় প্রকৃত কোনো শিক্ষার্থী নেই-ধার করা শিশু এনে চলছে পরীক্ষা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, পুর্ব চিলা হাসানিয়া, মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া, উত্তর ঘোপখালী, মোহাম্মদপুর মাহমুদিয়া নাচনাপাড়া ও কুতুবপুর ইসরাইলিয়া-এই পাঁচটি মাদ্রাসা সরকারিভাবে অনুদান পেলেও দুই-তিন বছর ধরে প্রকৃত কোনো শিক্ষার্থী দেখাতে পারেনি। কাগজে-কলমে ছাত্র দেখানো হলেও মাদ্রাসা ঘুরে পাওয়া যায় বন্ধ ঘর আর হাজিরা খাতায় শুধু শিক্ষকের স্বাক্ষর।

গত ২০ নভেম্বর ইবতেদায়ী পরীক্ষা শুরুর পর দেখা যায় দুই-একটি মাদ্রাসায় মাত্র একজন-দুজন করে ছাত্র পরীক্ষা দিচ্ছে। বেশিরভাগ মাদ্রাসায় কোনো পরীক্ষার্থীই নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নথিতে ৭৬টি মাদ্রাসার নামে দেখানো হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী, যা বাস্তবে নেই।

কুতুবপুর ইসরাইলিয়া মাদ্রাসায় দেখা যায়-চতুর্থ শ্রেণির আয়শা জুই ও তৃতীয় শ্রেণির সিয়াম পরীক্ষায় বসেছে। তারা আসলে কুকুয়া গোজখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী; পরীক্ষার দিন তাদের এনে বসানো হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষে দায়িত্বে থাকা শিক্ষক খাদিজাও খণ্ডকালীন।

মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া মাদ্রাসায় কোনো পরীক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। কলাপাড়া হাফেজি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মাহিন জানান, বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে তাকে এখানে আনা হয়েছে। অন্যদিকে মোহাম্মদপুর মাহমুদিয়া মাদ্রাসা সারাদিন তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।

মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া মাদ্রাসার ইবতেদায়ী প্রধান মাওলানা বশির আহম্মদ স্বীকার করেন-আমার মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থী নেই। কুতুবপুর ইসরাইলিয়া মাদ্রাসার প্রধান গোলাম কিবরিয়া জানান, দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।

উপজেলা ইবতেদায়ী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিন বলেন, অনুদানপ্রাপ্ত পাঁচটি মাদ্রাসার কোনো শিক্ষকই ছয় মাস ধরে বেতন পাননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার জানান, প্রশ্নপত্র মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষই তৈরি করে; পরীক্ষার্থী আছে কি না তা তাদের জানা নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াদুল হাসান বলেন, বাস্তবে অনুদানপ্রাপ্ত পাঁচটির অস্তিত্ব থাকলেও বাকি মাদ্রাসাগুলো শুধু নথিতে রয়েছে।


এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৩:৪২ ● ২৮ বার পঠিত