
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, গৌরনদী (বরিশাল)
লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে মানবপাচারকারী দালালসহ বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার ৪০ যুবককে আবারও আটক করেছে লিবিয়া পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে বেনগাজি শহরের সিটিখলিফা এলাকার একটি গেমঘর থেকে তাদের আটক করা হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। এ খবর নিশ্চিত করেছেন আটক যুবকদের একাধিক স্বজন।
গৌরনদীর এক আটক যুবকের মা জেসমিন খানম জানান, লিবিয়ার পুলিশ ওই রাতে অভিযান চালিয়ে দালাল জাকির মোল্লার প্রতিনিধি, গৌরনদীর ৩৬ এবং আগৈলঝাড়ার ৩ যুবকসহ মোট ৪০ জনকে আটক করে। সবার পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। শনিবার রাতে তার ছেলে ইমোর মাধ্যমে আটক হওয়ার বিষয়টি জানায়। এরপর থেকে পরিবারের সদস্যরা গভীর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন।
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইতালি যাওয়ার পথে কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয়েছিল তার ছেলে। ২৭ দিন পর দালাল জাকির মোল্লা তাদের ছাড়িয়ে এনে নিজ জিম্মায় রাখেন। এবারও ছাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন জাকির মোল্লা।
লিবিয়ায় বন্দি কয়েক যুবকের স্বজনরা জানান, ঋণ, জমি বিক্রি ও ধারদেনা করে তারা মানবপাচারকারী চক্রের কাছে ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। গৌরনদীর ইতালি প্রবাসী জাকির মোল্লা, বগুড়ার প্রবাসী সাজু, কুষ্টিয়ার লিটনসহ কয়েকজন দালালের মাধ্যমে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার অন্তত ৭০ জনসহ বিভিন্ন জেলার আরও শতাধিক যুবককে ভূমধ্যসাগর পথে ইতালি পাঠানোর পরিকল্পনা করে তারা।
জাকির মোল্লা ফোনে বলেন, তিনটি স্পিডবোটে আটক গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার ৭০ যুবকসহ ১০৮ বাংলাদেশিকে গত অক্টোবরের মধ্যে কারাগার থেকে ছাড়ানো হয়েছে। এবারও গেমঘর থেকে আটক হওয়া ৪০ যুবককে ছাড়ানোর চেষ্টা চলছে। যতবার আটক হবে, ততবারই ছাড়ানো হবে। তিনি দাবি করেন, এলাকার মানুষ নিজের ইচ্ছায় ইউরোপ যাওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে।
স্বজনদের দাবি, মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে সরকারিভাবে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে। তারা দ্রুত আটকদের নিরাপদে দেশে ফেরত আনার দাবি জানান।