
সাগরকন্যা প্রতিবেদক, গৌরনদী (বরিশাল)
নাঠৈ রিজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিন ও গরঙ্গল দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ফারহান হোসেন নান্নু’র বিরুদ্ধে হাজিরা জাল, দীর্ঘকাল অনুপস্থিতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত শাহিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেও বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। একই সময়ে মাদ্রাসার শিক্ষক নান্নু অসুস্থতার ছুটি দেখিয়ে সপরিবারে কক্সবাজারে পিকনিকে গেছেন বলে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন তাদের দীর্ঘসময়ের অনুপস্থিতির কারণে স্কুল ও মাদ্রাসার প্রশাসনিক কাজকর্ম ও পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে। প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতার সুযোগে একাধিকবার চুরি ঘটেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অন্য একটি গুরুতর অভিযোগে বলা হচ্ছে, শাহিন সরকারি পরীক্ষাকেন্দ্রে অঘোষিতভাবে প্রবেশ করে তার মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত অনিয়ম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে কেন্দ্র সচিব মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, শাহিনের মেয়ে এবছর পরীক্ষা দেয়ার কারণে তাকে কেন্দ্রীয় কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অন্যান্য বিদ্যালয়ের তুলনায় দ্বিগুণ মাসিক ফি নিচ্ছেন। গত দুইটি এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও উঠেছে।
গণিত ও প্রশাসনিক যোগসূত্র নিয়ে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ব্যক্তির সমর্থনে তাদের নিয়োগ হওয়া নিয়ে কথাও রয়েছে বলে অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে। আবেদনকারী পক্ষ জানিয়েছে, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গৌরনদী উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের (কালব) সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন অভিযোগ করেন, শাহিন তাকে কালবের সভাপতি হওয়ার জন্য পদত্যাগে চাপ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ফারহান হোসেন নান্নুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অভিযুক্ত মো. শাহিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তিনি কোনো অনিয়ম করেননি এবং ছুটি নেওয়া বা না নেওয়া নিয়ে অভিযোগ অপ্রাসঙ্গিক।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও রিফাত আরা মৌরী জানান, সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা একসঙ্গে করার নিয়ম নেই। উপভোক্তা অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএসআর/এমআর