পাখি মুক্তির মাঝে মানবতার ডাক

হোম পেজ » সম্পাদকীয় » পাখি মুক্তির মাঝে মানবতার ডাক
বুধবার ● ১৮ জুন ২০২৫


 

---

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশীয় প্রজাতির ১০টি তিলা ঘুঘু অবমুক্ত করার ঘটনাটি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় ও আশাব্যঞ্জক উদ্যোগ। পৌর শহরের একটি বাড়ি থেকে খাঁচাবন্দি অবস্থায় উদ্ধারকৃত এসব পাখি শুধু জীবনের অধিকার ফিরে পায়নি, আমাদের সমাজেও পরিবেশ সচেতনতা ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের এক উজ্জ্বল বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসিন সাদীকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পাখিগুলোর অবমুক্তকরণ প্রক্রিয়া স্থানীয় প্রশাসনের মানবিক ও আইনি দায়িত্ব পালনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তার এমন উদ্যোগ শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং জনসচেতনতা তৈরির পথেও এক কার্যকর পদক্ষেপ।

এই উদ্যোগের আরেক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল ‘এনিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালী’। এই সংগঠনটি শুধু পাখি নয়, বিগত কয়েক বছর ধরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও প্রাণীদের জীবন রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিপন্ন, আহত কিংবা অবৈধভাবে আটকে রাখা প্রাণীদের উদ্ধারে তারা যে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে—এটি দেশের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর জন্য এক প্রেরণার উৎস। তিলা ঘুঘু উদ্ধারের ক্ষেত্রেও তারা উদ্ধার থেকে শুরু করে চিকিৎসা ও পুনরায় অবমুক্ত করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

আমরা মনে করি, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুই খবরের বিষয় নয়—এগুলো হোক সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের হাতিয়ার। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে যদি প্রশাসন, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ মিলে বন্যপ্রাণী রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করে, তবে তা হবে আমাদের সভ্যতা ও সংবেদনশীলতার প্রকৃত পরিচয়।

 

পরিশেষে, আমরা আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী দেশীয় পাখি ধরা, বিক্রি কিংবা হস্তান্তর আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এ বিষয়ে আরও ব্যাপক প্রচার, শিক্ষা ও কার্যকর আইন প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি। কলাপাড়ার এই মানবিক উদাহরণ অনুসরণ করুক দেশের প্রতিটি উপজেলা, প্রতিটি প্রাণ বাঁচুক তার প্রকৃত আশ্রয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:০৬:৫৬ ● ৮৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ