বানারীপাড়ায় প্রবাসির স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

প্রথম পাতা » বরিশাল » বানারীপাড়ায় প্রবাসির স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
শনিবার ● ৩১ আগস্ট ২০১৯


বানারীপাড়ায় প্রবাসির স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

বানারীপাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বানারীপাড়ায় মালয়শিয়া প্রবাসি সোহাগ মৃধার স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৫)’র রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে খাদিজার পিতা ও উজিরপুর উপজেলার কালিহাতা গ্রামের বাসিন্দা সালাম খন্দকার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খলিলুর রহমান এ মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য লবনসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) মো. আবুল খায়েরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লবনসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) মো. আবুল খায়ের বলেন, উপজেলার পূর্ব সৈয়দকাঠী গ্রামের মালয়শিয়া প্রবাসি সোহাগ মৃধার স্ত্রী খাদিজা বেগম’র লাশ উদ্ধার করে সুরাতহাল রিপোর্ট করার সময় খদিজার হাতে, কপালে ও গলায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তমূখা ফুলা দাগ দেখতে পেয়েছেন। সুরাতহাল রিপোর্ট শেষে ৩১ সকালে খাদিজার লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে বলেও তদন্ত কর্মকর্তা জানান।
এবিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো.খলিলুর রহমান বলেন, খাদিজার মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ময়না তদন্তের রিপোর্টে খাদিজার মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে খাদিজার পিতা ও উজিরপুর উপজেলার কালিহাতা গ্রামের বাসিন্দা সালাম খন্দকার সহ পরীবারের লোকজন অভিযোগ করেন, মালয়শিয়া প্রবাসি মো.সোহাগ মৃধার স্ত্রী খাদিজা খাদিজাকে অপবাদ দিয়ে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে খাদিজাকে হত্যার আলামত পেলে পরবর্তীতে তিনি বাদী হয়ে এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করবেন বলে সালাম খন্দকার জানান।
এর আগে তিনি থানায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলায়ও ওই একই কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানান। তিনি আরও জানান, তার ময়না তদন্তের পর মেয়ে খাদিজাকে কালিহাতা গ্রামের নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করবেন এবং এক মাত্র নাতনী মরিয়ম (৩)কে তার কাছে রেখে লেখা পড়া শিখিয়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলবেন।
প্রসংগত উপজেলার পূর্ব সৈয়দকাঠী গ্রামের মালয়শিয়া প্রবাসি মো. সোহাগ মৃধার স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৫)’র সাথে তার একই এলাকার ফুফাতো ভাই সুমন আকন’র (২৭) দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক চলে আসছিল। স্বামীর অবর্তমানে সোহাগের পরিবার তাদের এ অবৈধ সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিল না। ২৫ আগষ্ট রাত সাড়ে ১১টায় নিজ ঘরে সোহাগের ছোট ভাই প্রবাসী আব্দুল জলিল মৃধা ও তার পরিবারের অপর সদস্যরা গোপন পাহারা দিয়ে খাদিজা বেগম ও প্রেমিক সুমনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে রেখে মারধর করার পাশাপাশি প্রবাসী জলিল মৃধা তাদের ওই অবস্থার ভিডিও ও ছবি তুলে রাখেন। এ সময় তাদের ডাকচিৎকার সুনে পাশর্^বর্তী লোকজন জড়ো হলে রাত অনেক হওয়ায় প্রভাবশালীরা পরবর্তীতে এ বিষয়টির সমাধান করবেন বলে তাদেরকে আস্বস্ত করে চলে যান। তাদের এ সুযোগে প্রেমিক সুমন সেখান থেকে সটকে পরেন। এনিয়ে ওই দিন থেকে পারিবারিক কলহ চলে আসার পাশাপাশি জলিল মৃধা ও তার পরীবারের সদস্যরা সময় অসময় খাদিজাকে শারীরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন।
৩০ আগষ্ট খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার পূর্ব সৈয়দকাঠী গ্রামের মালয়শিয়া প্রবাসি সোহাগ মৃধার স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৫)’র নিজ ঘরের ফ্যানের সাথে ওড়র্ণা প্যাচানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন।
এবিষয়ে সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান মৃধা বলেন, সকালে বাড়ি থেকে বানারীপাড়ায় যাওয়ার পথে জলিল মৃধার কাছ থেকে তার ভাইয়ের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পারেন। এ সময় তিনি থানা পুলিশকে ওই বিষয়টি অবহ্নিত করেন। পরে খবর পেয়ে পলিশ ঘটনাস্থল থেকে খাদিজার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

জিএমআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৪১:১৭ ● ৩৭৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ