আমতলীতে নির্বাচনী সভায় যাওয়ার পথে হামলায় আহত ১২

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে নির্বাচনী সভায় যাওয়ার পথে হামলায় আহত ১২
শনিবার ● ১৩ জুলাই ২০১৯


আমতলীতে নির্বাচনী সভায় যাওয়ার পথে হামলায় আহত-১২

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধার সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, তারা পুজাখোলা স্লুইজগেটে নির্বাচনী কর্মী সভায় যাওয়ার পথে আওয়ামীলীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার কর্মী সমর্থকদের হামলার শিকার হন। এনময় ১২ জনকে আহত এবং দেলোয়ার শাহার ঘর ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৮ জনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনা ঘটেছে শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার উল্টাখালী গ্রামের দেলোয়ার শাহার বাড়ীতে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। অপরদিকে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সমর্থকরা উল্টাখালী আওয়ামীলীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধার ছোটভাই মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা  ১৫/২০ জন কর্মী সমর্থক নিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার পুজাখোলা স্লুইজঘাট এলাকায় কর্মী সভায় যাচ্ছিল। কিছুদুর যাওয়ার পথে সমর্থক খালেক হাওলাদারের ছোটভাই মিজান হাওলাদার মুঠোফোনে জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের উপর আওয়ামীলীগ প্রার্থীর লোকজন হামলা চালাবে বলে পরিকল্পনা করছে। এ খবর পেয়ে জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধাসহ তার লোকজন উল্টাখালী গ্রামের দেলোয়ার শাহার বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ওই দেলোয়ার শাহার বাড়ীতে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে ঘর ভাংচুর করে এবং ওই ঘরে আশ্রয় নেয়া মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা ও তার লোকজনকে মারধর করেছে। এতে জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা, খালেক হাওলাদার, হাসান মৃধা, আলমগীর প্যাদা, আবদুস চালাম মাতুব্বর, আলাউদ্দিন, সাইফুল, আরিফুর রহমান, মিজানুর রহমান সরদার, খলিল, মুছা মিয়া ও জামাল মিয়া আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা, খালেক হাওলাদার, কামরুল হাসান,আলাউদ্দিন, আলমগীর প্যাদা, ছালাম মাতুব্বর ও শহীদুল ইসলামকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা হামলার খবর পেয়ে উল্টাখালী বাজারের আওয়ামীলীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়, বঙ্গবন্ধুর ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করেছে বলে এমন অভিযোগ আওয়ামীলীগ প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ রবিউল ম্যালকার, জসিম মোল্লা, শাহ জালাল ও আরিফ নামের চার জনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী আসাদুল শাহাসহ কয়েকজন জানান, আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ধাওয়া খেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন দেলোয়ার শাহার ঘরে আশ্রয় নেয়। নৌকার শতাধিক কর্মী সমর্থক এসে ওই ঘর ভাংচুর ও ব্যাপক মারধর শেষে ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক আহত খালেক হাওলাদার বলেন, আমার ছোট ভাই নিজাম হাওলাদার আমাকে মুঠোফোনে জানায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সমর্থকরা মারধর করার পরিকল্পনা নিচ্ছে। এ খবর পেয়ে আমরা দেলোয়ার শাহার ঘরে আশ্রয় নেই। আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সমর্থকরা ওই ঘর ভাংচুর করে আমাদের মারধর করেছে।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনে আমার উল্টাখালী বাজারের নির্বাচনী কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আমার সুলতান ও আসাদ মৃধা নামের দুই কর্মীকে মারধর করে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা আওয়ামীলীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের কথা অস্বীকার করে বলেন, নৌকার প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরা এলাকায় জানিয়ে দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোন কর্মী-সমর্থক কর্মীসভা ও ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে পারবে না। ভোট চাইলেই তাদের প্রতিহত করা হবে। এরই ধারিাবাহিকতায় আমার লোকজন কর্মী সভা করতে যাওয়ার পথে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা মারধরে করেছে।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জিএম দেলওয়ার হোসেন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও আওয়ামীলীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, যারা এ কাজ করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানাই।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চার জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের কথা শুনেছি।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৮:১১:২৫ ● ৫২৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ