আমতলীতে ভিজিডির চাল বিতরণ তালিকায় অনিয়ম

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে ভিজিডির চাল বিতরণ তালিকায় অনিয়ম
বুধবার ● ২৯ মে ২০১৯


আমতলীতে ভিজিডির চাল বিতরণ তালিকায় অনিয়ম

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরগুনার আমতলী উপজেলা আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে দুঃস্থ মহিলাদের মাঝে ভিজিডি চাল বিতরনের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুঃস্থ তালিকায় ইউপি চেয়ারম্যানের বড় ভাই সরোয়ার হাওলাদারের স্ত্রী নিলুফা। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়নের ছয় ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেনের কাছে আবেদন দিয়েছেন। ইউএনও মোঃ সরোয়ার হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দুঃস্থ  মহিলাদের ভিজিডি কর্মসূচীর আওতায় আনার জন্য গত জানুয়ারী মাসে অনলাইনে আবেদন জমা নেন। ওই আবেদন যাছাই বাছাই শেষে হত দরিদ্র ৩০৫ জনের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়। জনপ্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। এ মেয়াদ কাল দুই বছর।
ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ অনলাইনে আবেদন যাচাই বাছাই কালে তাদের না জানিয়ে নিজের ইচ্ছামত তার ভাই, নিকটাস্থীয়, আর্থিকভাবে সচ্ছল,বিদেশে থাকে, অন্য উপজেলায় বসবাস করে এমন পরিবারের লোকদের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছেন। দীর্ঘ চার মাস ওই তালিকা চেয়ারম্যান জনসমুক্ষে প্রকাশ করেনি। গত ২৬ মে ওই তালিকা অনুসারে গত জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসের চাল বিতরন শুরু করেন চেয়ারম্যান। ওই চাল বিতরন কালে ইউপি সদস্যরা অনিয়ম খুঁজে পায়। পরে তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
দুঃস্থ মহিলাদেরর ওই তালিকা ঘেটে দেখাগেছে, ওই তালিকায় অর্ন্তভূক্ত ১ নং ওয়ার্ডের জাহানারা বেগম ,বিভা রানী, পারভীন বেগম, হনুফা বেগম, পারভীন বেগম, জহরা বেগম, রাশিদা বেগম,  ২ নং ওয়ার্ডের শিউলি বেগম, মনিরা বেগম,সাহিদা বেগম,নাছিমা বেগম, খাদিজা বেগম,৩ নং ওয়ার্ডের সালমা বেগম, মমতাজ বেগম, জোসনা বেগম, ছাহেরা বেগম, ঝর্না বিবি, জাহানারা, রিমা আক্তার, তাসলিমা বেগম, ৪ নং ওয়ার্ডের লাকি বেগম, শিরিন বেগম, আসমা বেগম, রাহিমা বেগম,রুজিনা বেগম, ৫ নং ওয়ার্ডের মাহামুদা বেগম, রেশমা আকতার টিকলী, নুরভানু, তুলি,৭ নং ওয়ার্ডের ঝুমুর রানী, থালেদা বেগম, নিলফা, লাইজু বেগম, ৮ নং ওয়ার্ডের মাকসুদা বেগম, কাজল রানী, আসমা,লুৎফুন্নাহার ও  সালমা বেগম আর্থিকভাবে সচ্ছল। এর মধ্যে নুর ভানু মহিলা ইউপি সদস্য লাইজুর ভাইয়ের স্ত্রী। নিলুফা বেগম চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের বড় ভাই সরোয়ার হাওলাদারের স্ত্রী। লাইজু বেগম  পার্শ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলায় বসবাস করেন। জাহানারা বেগমের স্বামী মোতালেব আকন, শিরিন বেগমের স্বামী কামাল হোসেন বিদেশে থাকেন। পারভীন বেগম ইউপি সদস্য কদম আলীর ভাইয়ের স্ত্রী।
৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নাশির উদ্দিন মোল্লা বলেন, চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ নিজের ইচ্ছামত তার ভাই, আত্মীয় স্বজন,বিদেশে থাকেন, অন্য উপজেলায় বসবাস করেন এবং আর্থিকভাবে সচ্ছল এমন ব্যাক্তিদের সুবিধা দেয়ার জন্য আমাদের না জানিয়ে তালিকা করেছেন। তার অনিয়েমের অভিযোগ এনে ছয় ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছি। আমরা তদন্তপূর্বক চেয়ারম্যান অনৈতিকভাবে যাদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন তাদের নাম বাদ দিয়ে হতদরিদ্রদের নাম তালিকাভুক্ত করে চাল বিতরনের দাবী জানাই।
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন মাষ্টার বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে না জানিয়ে আর্থিকভাবে সচ্ছল এমন ব্যাক্তিদের ভিজিডির তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত করেছেন। দ্রুত ওই সচ্ছল ব্যাক্তিদের তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে হতদরিদ্রদের তালিকায় নাম অর্স্তভুক্ত করে চাল বিতরনের দাবী জানাই।
আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ ইউপি সদস্যদের অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে বলেন,যত বরাদ্দ আসে তার অর্ধেক ইউপি সদস্যরা নিয়ে নেন। এতে তার হাত থাকে না।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৪:৩৯ ● ৩৮৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ