আমতলীতে বিয়ের প্রলভনে যুবতিকে ধর্ষণের অভিযোগ, ধর্ষক গ্রেফতার

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে বিয়ের প্রলভনে যুবতিকে ধর্ষণের অভিযোগ, ধর্ষক গ্রেফতার
বুধবার ● ২২ মে ২০১৯


আমতলীতে বিয়ের প্রলভনে যুবতিকে ধর্ষণের অভিযোগ,  ধর্ষক গ্রেফতার

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবতিকে ধর্ষণ করেছে মিজান মোল্লা নামের দুই জন্তানের জনক। মিজান মোল্লার ধর্ষণে ওই যুবতি ছয় মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা হলে ঔষধ খাইয়ে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করেছে মিজান এমন অভিযোগ ওই যুবতীর। পুলিশ মঙ্গলবার রাতে মিজান মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে।
বুধবার (২২ মে) আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে মিজান মোল্লা কলাগাছিয়া বাজারে মোবাইল মেরামতের কাজ করে আসছে। মোরাইল মেরামতের আড়ালে ওই যুবতির সাথে তার সখ্যতা গড়ে তোলে। এক পর্যায় মিজান মোল্লা ওই যুবতিকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় কিন্তু তার প্রস্তাবে যুবতি রাজি হয়নি। গত বছর ৩০ মে মিজান মোল্লা ওই যুবতির বাড়ীতে যায়। ওই সময় ওই বাড়ীতে কেউ ছিল না। যুবতিকে একা পেয়ে মিজান মোল্লা তাকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর থেকে প্রায়ই মিজান ওই যুবতিকে ধর্ষণ করে আসছে। এতে ওই যুবতি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃস্বত্ত¦া হওয়ার খবর জেনে মিজান তাৎক্ষনিক ওই যুবতিকে এ বছর ৯ মার্চ আমতলীর মহিষকাটা সিলভি ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। ওই সেন্টার যুবতির আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। আল্ট্রাসনোলজষ্টি বিএম মাসুদ রানা ওই যুবতির আল্ট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদনে চার মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা বলে উল্লেখ করেছেন।  এ আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেনি মিজান। এরপর ২৭ মার্চ ্ওই যুবতিকে নিয়ে পটুয়াখালীর এফপিএবি ক্লিনিকে ডাক্তারী পরীক্ষা করান। ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক তাহমিনা খানম সিদ্দিকা ডাক্তারী পরীক্ষা প্রতিবেদনে ওই যুবতি ছয় মাস ৫ দিনের অন্তঃস্বত্ত্বা বলে উল্লেখ করেন। এরপরে ওই যুবতি মিজান মোল্লাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন কিন্তু মিজান মোল্লা আজ-কাল করে তালবাহানা করতে থাকে। বিগত ২৮ মার্চ মিজান ওই যুবতিকে ভিটামিন ট্যাবলেটের সাথে কিট-৩ নামক একটি ঔধষ এনে দেয় এবং এই ঔষধ খেলে পেটের বাচ্চা ভালো থাকবে  বলে জানায়। সরল বিশ^াসে ওই যুবতি ওই ঔষধ খাওয়ার তিন দিন পরে রক্তক্ষরণ হয় এবং বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। বাচ্চা নষ্টের খবর মিজানকে জানালে মিজান ওই যুবতিকে নিয়ে পটুয়াখালী হার্ট ফাউন্ডেশন এন্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। ওই সেন্টারে যুবতির অন্তঃস্বত্ত্বা পরীক্ষা করান। ওই সেন্টারের চিকিৎসক মোঃ দেলোয়ার হোসেন তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন ওই যুবতির গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। মিজান গর্ভের বাচ্চা নষ্ট জেনে ওই যুবতির সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।  নিরুপায় হয়ে ওই যুবতি মঙ্গলবার রাতে বাদী হয়ে  আমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) তৎসহ ৩১৩ ধারায় জোরপূর্বক ধর্ষণ ও গর্ভপাত করানোর অপরাধে মামলা দায়ের করেন।ওই রাতেই পুলিশ মিজান মোল্লাকে তার গ্রামের বাড়ী কলাগাছিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে।
বুধবার পুলিশ তাকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মিজান মোল্লাকে গ্রেফতারের খবর দ্রুত এলাকার ছড়িয়ে পড়ে। এতে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কয়েকজন বলেন, মিজান মোল্লা মোবাইল মেরামতের আড়ালে এলাকার বিভিন্ন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তার কারনে এলাকার মেয়েরা ঠিকমত স্কুল ও মাদ্রাসায় যেতে পারতো না। তার  বিরুদ্ধে এলাকার বিভিন্ন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করনের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু মান সম্মানের তাগিদে কেউ মুখ খুলছে না।  তারা আরো বলেন, একটি সত্য ঘটনায় পুলিশ মিজানকে গ্রেফতার করেছে। মিজারনের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আরো একটি নারী নির্যাতনের মামলা রয়েছে। আমরা মিজানের বিচার দাবী করছি।
ওই যুবতি বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মিজান মোল্লা আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। আমি বিয়ের কথা বললেই আজ-কাল বলে কালক্ষেপন করতো। আমার পেটে ওর বাচ্চার খবর নিশ্চিত জেনে কৌশলে বিষাক্ত ঔষধ খাইয়ে বাচ্চা নষ্ট করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, আসামী মিজান মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩১:২৯ ● ৩৮৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ