সাগরে মাছ শিকার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ সংশোধনের দাবিতে মাঠে জেলেদেরমিানববন্ধন

প্রথম পাতা » কুয়াকাটা » সাগরে মাছ শিকার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ সংশোধনের দাবিতে মাঠে জেলেদেরমিানববন্ধন
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০১৯


---

সাগরকন্যা রিপোর্ট॥
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ সৃস্টি হওয়ায় জেলেরা ইলিশ ভরামৌসুমে ইলিশ শিকার করতে পারছে না। যখন সমুদ্র শান্ত হয় তখন সরকারের জারিকৃত ইলিশ শিকার অবরোধ জেলেদের মরার উপর খারার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলে পেশা ও ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে ইশিল শিকারের বন্ধের জন্য নির্ধারিত ৬৫ দিন অবরোধের সময়সীমা পুনঃনির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে পটুয়াখালী আলীপুর-মহিপুর মৎস্যবন্দর এবং কুয়াকাটার হাজারো জেলে, মৎস্যব্যবসায়ী ও মাছধরা ট্রলার মালিকরা। শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরের শেখ রাসেল সেতুর এ কর্মসূচীতে আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি, মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি, কলাপাড়া উপজেলা ফিশিং ট্রলার মাঝি সমিতি, কুয়াকাটা-আলীপুর ট্রলার মালিক সমিতি, মহিপুর ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহন করে।

শনিবার সকাল ১০টায় উপকূলীয় বাসির প্রাণের দাবি আদায়ের জন্য পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের শেখ রাসেল সেতুর উপড় আলীপুর, মহিপুর, কুয়াকাটা মস্যব্যবসায়ী সমিতি এবং ফিশিং বোট মালিক সমিতিসহ জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত অন্যান সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
শেখ রাসের সেতুর ওপর অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বক্তরা বলেন, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিনেন্স ১৯৮৩ এর ধারা ১৮ সংশোধন করে ধারা ১৯ এর পূণঃসংশোধন পূর্বক ফিশিং ট্রলারসহ সকল ইঞ্জিন চালিত নৌকায় মাছ ধরার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানায়।
সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা আরো বলেন, বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ছয় মাস ইলিশের পাওয়া গেলেও মূলত জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবন ও ভাদ্র মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। এসময় প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে পারে না। অথচ উল্লেখিত সময়ে সরকারের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ৬৫ দিন ইলিশ শিকার করা বন্ধ রাখার নির্দেশনা আসছে। এ নির্দেশ বাস্তবায়ন হলে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়িদের অপুরনীয় ক্ষতি হবে। সে কারণে জেলেসহ মৎস্য ব্যবসায়ীরা এ প্রজ্ঞাপন সংশোধনে দাবি জানায়।
মৎস্য ব্যবসায়িরা আরো বলেন, উপকূলীয় জেলেরা সরকারের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন মেনে জাটকা ইলিশ শিকার বন্ধ রাখে। কিন্তু একই সময়ে ভারতের হাজারো জেলেরা এ নিষেধাজ্ঞা না মেনে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে ইলিশ শিকার করে। এমনকি মা ইলিশ প্রজনন মৌসুমেও বাংলাদেশের জেলেরা ইলিশ শিকার বন্ধ রাখলেও ভারতীয় জেলেরা ইলিশ শিকার অব্যহত রাখে।

তাই ২০ মে থেকে  ২৩ জুলাই এই দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রাখলে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে ইলিশ শিকার করবে। এতে উপকূলের জেলেরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে আর লাভবান হবে ভারতীয় জেলেরা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয় ২০১৫ সালে ২০ মে মৎস্য-২ (আইন) অধিশাখা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে সামুদ্রিক সমৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও সংরক্ষনের লক্ষ্যে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধরাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপনটি এত বছর বাস্তবায়ন না হলেও চলতি মৌসুমে বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়া রয়েছে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার সমবায় সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাছুম বেপারী, লতাচাপলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার সমবায় সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা, মহিপুর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার গাজী, মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী ফজলু গাজী, ট্রলার মালিক আসাদুজ্জামান দিদার ও জলিল হাওলাদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫০:৫৩ ● ৫৪৭ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ