আমতলী সরকারি কলেজঅধ্যক্ষসহ শূন্য পদে শিক্ষকের দাবিতে মানববন্ধন

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলী সরকারি কলেজঅধ্যক্ষসহ শূন্য পদে শিক্ষকের দাবিতে মানববন্ধন
বৃহস্পতিবার ● ২০ অক্টোবর ২০২২


আমতলীতে অধ্যক্ষসহ শূন্য পদে শিক্ষকের দাবিতে মানববন্ধন

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আমতলী সরকারী কলেজে অধ্যক্ষ নেই, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়েই চলছে কার্যক্রম। শিক্ষক সংঙ্কট চরমে। শিক্ষক সংঙ্কট থাকায় কলেজের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। ২২ বিষয়ের ১০ বিষয়ে শিক্ষক নেই। ১০ বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। কলেজে অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মচারী ও অফিস সহায়কসহ ৪৪ জনের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২১ জন। অর্ধেক পদ অর্থাৎ ২৩ জনের পদ শুন্য। অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারী  চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও  কলেজের কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। দ্রুত অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারী দেয়ার দাবীতে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে ছাত্রলীগের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে কয়েকশত ছাত্রলীগ নেতা কর্মী ও কলেজ শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করেন।
জানাগেছে, ১৯৬৯ সালে আমতলী উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে শিক্ষানুরাগী সাবেক এমপিএ আলহাজ্ব মোঃ মফিজ উদ্দিন তালুকদার কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে অল্প শিক্ষার্থী দিয়ে কলেজের পাঠদান শুরু হলেও বেশী দিন তা অব্যহত থাকেনি। দিন দিন প্রসার ঘটতে থাকে কলেজের। মানসম্মত পাঠদান দেওয়ার ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল কলেজটিকে জাতীয়করণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয়করণ হওয়ার পরপরই অনেক শিক্ষক অবসরে যান। ওই সময় থেকেই শিক্ষক সংঙ্কট দেখা দেয়। বর্তমানে কলেজটি চরম শিক্ষক সংঙ্কট রয়েছে। বিজ্ঞান, বানিজ্য ও মানবিক বিভাগে কলেজে ¯œাতক, একাদ্বশ ও দ্বাদশ শ্রেনীতে দুই হাজার সাত’শ ৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজের ২২ টি বিষয়ের পাঠদান হয়। জাতীয়করণের পর থেকে এ ২২ বিষয়ের মধ্যে ১০ টি বিষয়ের শিক্ষক অবসরে যান। শিক্ষক না থাকায় ১০বিষয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। আবশ্যিক বিষয় বাংলার শিক্ষক মোসাঃ রেহেনা খানম ২০১৬ সালে অবসরে  গেছেন। ওই সময়ে থেকে এ বিষয়ের শিক্ষক নেই। গত বছর ১ অক্টোবর আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার অবসরে যান। এক বছর ধরে আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক পদ শুন্য। গত ১৫ বছর ধরে ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিষয়ের শিক্ষক নেই। ২০১৯ সাল থেকে ইসলামের ইতিহাস, ইতিহাস, অর্থনীতি, পৌরনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ের শিক্ষক নেই। লাইব্রেরীয়ান ও শারীরিক শিক্ষক নেই দীর্ঘদিন ধরে। তিনজন কারনিকের আছে একজন। ৫ জন প্রদর্শক শিক্ষকের বিপরীতে আছে দুই জন। ১১ জনের অফিস সহায়ক পদের স্থানে কর্মরত আছে মাত্র ৫ জন। ৬ জনের পদ শুন্য। কলেজে শুধুই নেই আর নেই এমন দাবী কর্মরত শিক্ষকদের। এদিকে গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মজিবুর রহমান অবসরে যান। বর্তমানে কলেজটিতে অধ্যক্ষ পদও শুন্য। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে কলেজের কার্যক্রম। জাতীয়করণের পর থেকে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় শিক্ষক সঙ্কট চরম আকার ধারন করছে। গত ছয় বছর ধরে শিক্ষক অবসরে গেলেও শিক্ষা মন্ত্রনালয় শিক্ষক দিচ্ছেন না এমন অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কঙ্কাবতী বিশ্বাস। এতে পাঠদান বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। দ্রুত অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারী দেয়ার দাবীতে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে। পৌর ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত রসুল অপুর সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাফি হাসান অভি, মেহেদী হাসান, রামিম মাতুব্বর ও জিয়া উদ্দিন প্রমুখ। মানববন্ধনে কয়েকশত ছাত্রলীগ নেতা কর্মী ও কলেজ শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করেন।

অধ্যক্ষ কঙ্কাবতী বিশ্বাস (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, কজেলের ২২ টি বিষয়ের ১০ টি বিষয়ের শিক্ষক নেই। জাতীয়করণের পর থেকে অবসরে যাওয়ায় ১০ বিষয়ের শিক্ষক পদ শুন্য। সংশ্লিষ্ট দফতরে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেছি কিন্তু পাচ্ছি না। শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কারনিক ও অফিস সহায়কসহ ৪৪ জনের পদ রয়েছে। কিন্তু কর্মরত আছে মাত্র ২১ জন। ২৩ জনের পদ শুন্য রয়েছে। দ্রুত চাহিদামত শিক্ষক, কারনিক ও অফিস সহায়ক না থাকায় কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:২১:৫৭ ● ১৫৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ