অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে গৌরনদীতে ভ্যান চালায় বাকপ্রতিবন্ধী শিশু আফাত!

প্রথম পাতা » বরিশাল » অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে গৌরনদীতে ভ্যান চালায় বাকপ্রতিবন্ধী শিশু আফাত!
মঙ্গলবার ● ২৩ আগস্ট ২০২২


গৌরনদীতে ভ্যান চালায় বাকপ্রতিবন্ধী শিশু আফাত!

গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী গ্রামের ক্যান্সার আক্রান্ত হালিম সরদারের পুত্র আজিজুল ইসলাম আফাত (১২) জন্ম থেকে বাকপ্রতিবন্ধী। এ বয়সে লেখাপড়া ও বন্ধুদের সঙ্গে স্কুল ও খেলার মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর কথা ছিল তার। পিতা-মাতার আদর, ভালোবাসা, ¯েœহ, মমতার আচঁলে হাসিখুশি যার থাকার কথা। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, ৫ সদস্যের পরিবারের মুখে দুমুটো আহার ও ক্যান্সারের আক্রান্ত অসহায় পিতা হালিম সরদারের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা, শারীরিক বাকপ্রতিবন্ধী শিশু আফাত। ভ্যানের চাকা না ঘুরলে পরিবারের সদস্যদের পেটে ভাত জুটেনা। চলেনা ক্যান্সারে আক্রান্ত পিতার চিকিৎসা।
মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হালিম সরদারের (৪০) স্ত্রী আছমা সরদার  (৩২) বলেন, আমার স্বামী হালিম সরদার পুরান ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার সোনা মিয়া সরদারের প্রথম স্ত্রীর সন্তান। গত ১৫ বছর পূর্বে আমার সঙ্গে হালিম সরদারের বিয়ে হয়। তখন  তিনি ভাড়া বাসায় থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু রিকশার আয়ে তাদের সংসার চলছিলনা। শেষে স্বামীর সাথে পরামর্শ করে ১০বছর আগে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী গ্রামে ্আমার বাবা লেহাজদ্দিন সরদারের বাড়িতে চলে আসি । আমার বাবার দেয়া ৪শতক জমির ওপর ছোট একটি টিনের ঘরে বসবাস শুরু করি। অর্থ সম্পদ না থাকায় স্বামী হালিম সরদার, ভাড়ায় তিন চাকার অটোভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। তাতে সুন্দর ভাবে চলছিলো আমাদের সংসার। দুইবছর আগে স্বামী হালিম হঠ্যাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পর তার কন্ঠনালীতে ক্যান্সার ধরা পরে। এমনিতে আমার পুত্র আফাত জন্ম থেকে বাকপ্রতিবন্ধী। সে (আফাত) প্রতিবন্ধী ভাতাও পাচ্ছেনা। টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছিনা। তার ওপর স্বামী ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই দুঃশ্চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারিনা। দুই ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে কোন ভাবে দিন চলছে। অভাব অনাটনের সংসার। স্বামীর চিকিৎসার অর্থ আমি কোথায় পাবো ? সংসারের খরচ ও স্বামীর ওষুধের অর্থ যোগাড় করাতে রাস্তায় নামিয়ে ভ্যান চালাতে বাধ্য করেছি আফাত‘কে। আফাত ঠিক ভাবে কথা বলতে না পারায় অনেক সময় যাত্রী ওর ভ্যানে উঠতে চায়না। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে তিন থেকে চারশ টাকা উপার্জন করে প্রতিবন্ধী আফাত। আর সেই টাকা দিয়েই চলে ওর বাবার চিকিৎসা ও পাঁচ সদস্যের সংসার।
আছমা আরও বলেন, জীবনের সহায় সম্বল বিক্রি করে স্বামী চিকিৎসা করিয়েছি। সবকিছু হারিয়ে এখন আমি নিঃস্ব। তার চিকিৎসায় প্রতি মাসে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয় । এই ব্যয় বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
তাই বাংলাদেশ সরকারসহ সমাজের বিত্তবান, দানশীল,ও প্রবাসী ব্যক্তির নিকট তিনি তার সন্তান ও স্বামীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা চান আছমা। সাহায্য পাঠাবার ঠিকানাঃ আছমা সরদার ডার্চবাংলা সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৭০১৭৫১৭৯২৫০৬২/ গৌরনদী বরিশাল। বিকাশ নং: ০১৭৩৬৫২৯৩৮৯।

আরএ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩১:৪৬ ● ১৫৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ