নেছারাবাদে চুরির অপবাদে মাদ্রাসার খাদেমকে মারধর!

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » নেছারাবাদে চুরির অপবাদে মাদ্রাসার খাদেমকে মারধর!
সোমবার ● ২৫ জুলাই ২০২২


নেছারাবাদে চুরির অপবাদে মাদ্রাসার খাদেমকে মারধর!

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

নেছারাবাদে চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার খাদেমকে বেধে ফ্লিমি স্টাইলে বেদম মারপিট করেছেন ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা। ইউপি সদস্যের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে সোহাগদল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো.কামরুল ইসলাম খোকন ও তার সহযোগীরা উত্তর পশ্চিম সোহাগদল বায়তুন নুর জামে মসজিদের ইলেকট্রনিক্স মালামাল চুরির অভিযোগ এনে ইন্দেরহাট বন্দর থেকে মো. জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ধরে সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ইউপি সদস্য খোকন ও তার সহযোগীরা জহিরুল ইসলামকে বেধে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটাতে থাকে এবং এলোপাথারি চর থাপ্পর মারে। এসময় জহিরুল ইসলাম চিৎকার দিয়ে বলতে থাকেন, “আমাকে মারেন কেন, আমাকে মারবেন না, আইনের লোক আছে, প্রয়োজনে তাদের হাতে তুলে দিন, আপনারা আমার মোবাইল ও জিনিস পত্র সব নিয়ে গেছেন, আমি অসুস্থ আমাকে মাইরেন না”। এসময় সহযোগীদের মধ্যে একজন পায়ের নিচে পিটানোর নির্দেশ দেয়। ঘটনার সময় পাশে দাড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি বলে উঠেন লোকটাকে কি মেরে ফেলবে। একপর্যায়ে খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জহিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ইউপি সদস্য খোকন বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। রবিবার সকালে জহিরকে ওই মামলায় পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে জহিরকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়। (যা এই প্রতিনিধির সংগ্রহে রয়েছে।)
মো. জহিরুল ইসলাম পাশ্ববর্তী ঝালকাঠী উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। সে ঝালকাঠী জেলার হদুয়া বৈশাখিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার একজন খাদেম বলে জানান ওই মাদ্রাসার আরএক খাদেম সাইদুল ইসলাম।

ঘটনার বিষয়ে ইউপি সদস্য খোকনের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে, “সাংবাদিকের কাছে জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন বলে জানান। আইন নিজের হাতে নিয়ে কাউকে এভাবে নির্যাতন করার বিধান আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি আমাকে ইজ্জত দিয়ে কথা বলবেন বলে ফোনটা কেটে দেন।

এ ব্যপারে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ সার্কেল) মো. রিয়াজ হোসেন (পিপিএম) বলেন, ভিডিও দেখেছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। কোন ব্যক্তিকে এভাবে মারার অধিকার কারো নেই। এব্যাপারে ওসি ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বিস্তারিত জানার জন্য বলা হয়েছে পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।

আরএ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৮:০০ ● ৫০০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ