শনিবার ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » শনিবার ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস
শুক্রবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২১


শনিবার ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর আজকের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ লড়াই করে ফুলবাড়ী থেকে দখলদার পাকবাহিনীকে তাড়িয়ে শত্রু মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিল।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদের সুত্রে জানা গেছে, তৎকালীন ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরু থেকেই যখন পাকিস্তাানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী উত্তাল আন্দোলন চলছিল তখন শান্তিশৃংখলা বজায় রেখে বাঙালি ও অবাঙালিদের মধ্যে যেন কোনো প্রকার সংঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্য মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফুলবাড়ীতে গঠিত হয় সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি। ২৪ মার্চ পর্যন্ত ফুলবাড়ীতে পূর্ণ শান্তি বিরাজ করে। কিন্তু ২৫ মার্চের গভীর রাতে সারা দেশে পাাকবাহিনীর দ্বারা নিরীহ বাঙালিদের হত্যাযজ্ঞের খবর দ্রুত পৌঁছে গেলে, পরদিন ২৬ মার্চ এই হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে ফুলবাড়ী শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয় ।
স্বাধীনতা যুদ্ধের এক পর্যায়ে এপ্রিলের ২ তারিখ দখলদার পাকবাহিনী ফুলবাড়ী আক্রমণ করে পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। আর তখন থেকে শুরু হয় এখানকার বাঙালিদের ওপর দখলদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার। চলতে থাকে হত্যা, লুটতারাজ ও অগ্নিসংযোগসহ বর্বর নির্যাতন।
মাতৃভূমিকে দখলদারমুক্ত করতে সেইসময় ফুলবাড়ীর মুক্তিকামী যুবকরা যোগ দেন মুক্তিবাহিনীতে। মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার জলপাইতলী, পানিকাটা, দেশমা, রুদ্রানী, জলেশ্বরী, আমড়া, রানীনগরসহ বিভিন্ন সীমান্ত পথে ফুলবাড়ীতে প্রবেশ করে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে চতুর্মুখী আক্রমণ চালায় মুক্তি সেনারা। মিত্রবাহিনীর হাতে নিশ্চিত পরাজয় বুঝে পাকসেনারা ফুলবাড়ী শহরে মিত্রবাহিনীর আগমন ঠেকাতে সেই সময় ৪ঠা ডিসেম্বর বিকেলে ফুলবাড়ীর ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মিত লোহার সেতুর পূর্বাংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। সেতুটি কালের সাক্ষী হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে ফুলবাড়ী পৌর শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যুমনার বুকে।
এসময় পাকবাহিনীর গুলিতে নিহত হন একজন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের দক্ষিণে যমুনা নদীর পাশে। সেখানে ওই সেনা কর্মকর্তার  স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এরপর  দখলদার বাহিনীরা সড়ক পথে ফুলবাড়ী ছেড়ে য়ৈসদপুরের দিকে পালিয়ে যায়।
অবশেষে ১৯৭১ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনী যৌথভাবে পাক হানাদারমুক্ত করে ফুলবাড়ী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দেয় মুক্তি সেনারা। দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছর স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে আসছেন।
সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: লিয়াকত আলী ও সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: এছার উদ্দিন জানান, ৪ঠা ডিসেম্বর এই দিনটি আমাদের কাছে স্বারণীয় একটি দিন তাই প্রতিবছর এই দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করে আসছি আমরা। তবে করোনার কারনে এবছর কোন কর্মসুচি হাতে নেয়া হয়নি।#


এএইচসি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:২৬:১১ ● ২৩২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ