গলাচিপায় সরকারি ঘর পেতে হতদরিদ্র বশিরের আর্তি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » গলাচিপায় সরকারি ঘর পেতে হতদরিদ্র বশিরের আর্তি
সোমবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১


গলাচিপায় সরকারি ঘর পেতে হতদরিদ্র বশিরের আর্তি

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর গলাচিপায় প্রধানমন্ত্রীর ঘরের আশায় পথে পথে ঘুরছে বশির তালুকদার (৪২)। হতদরিদ্র বশির তালুকদারের বাড়ি উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব গোলখালী এলাকায়। তার পিতার নাম মৃত. হাফেজ তালুকদার। এক স্ত্রী ও তিনসন্তানের পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি নিজেই।
জীবন যুদ্ধের এক অসহায় জেলের জীবনের গল্প বড়ই করুণ। জীবিকার তাগিদে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে করে যাচ্ছেন জেলের কাজ। নিজের বলতে নাই কোন সম্বল, কাজ করেন পরের সাথে। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কাটাতে হয় সাগরে, কখনো সাগরের তীরে, কখনো সাগরের মাঝে। এভাবেই ছুটে চলছে বশির তালুকদারের সংগ্রামী জীবন। কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন জীবনের বেলা ভূমিতে। তিনি আজ হতাশা গ্রস্থ। পরের কাজ করে কত আর ভাল থাকা যায়। সংসারে অভাব অনটন লেগে থাকে প্রতিটি মূহুর্ত। মেয়ের বয়স ১০, বড় ছেলের বয়স ১৮ এবং ছোট ছেলের বয়স ১৩। সংসারের অভাব অনটনের কারণে বড় ছেলেটা আজ পড়ালেখা বাদ দিয়ে ঢাকা শহরের একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করে। ছোট ছেলেটাও মাঝে মাঝে পেটের তাগিদে ঢাকা শহরে মানুষের সাথে কাজ করে, তারপর আবার পড়ালেখাও করে। অভাব নামক শব্দটি তাকে কুড়ে কুড়ে খায় প্রতিটি মূহুর্ত। মন চাইলেও ছেলে মেয়েদেরকে ঠিক মত পড়াতে পারছেনা। কতটা কষ্ট সহ্য করে মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। থাকেন একটি ছোট্ট পুরাতন টিনের ছাউনি, জড়াজীর্ণ কাঠের বেড়া দেয়া মাটির ঘরে। বশির তালুকদার বলেন, সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই আজ কেমন যেন অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। নিজের ইচ্ছা থাকলেও ছেলে-মেয়েদেরকে ঠিক মত মানুষ করতে পারলাম না। নিজের ঘরবাড়ি কিছুই নাই। দিনে দিনে বয়সটা মনে হয় বাড়ছে না কমেই যাচ্ছে। যে কাজ সাগরে করি তাও আজ আছে কাল নাই। এখন আর শরীরের শক্তিও পাইনা আগের মত। তাই সাগরের কাজও পাই কম। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দিন কাটাতে হয় বড় কষ্টের মঝে। বর্ষা এলেই নেমে আসে জীবনের সবচেয়ে বড় কালো অধ্যায়। সারারাত জেগে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বসে থাকতে হয়। বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় ঘরের ভিতরের সবকিছু। ঘর ঠিক করানোর মত টাকাও নেই। ঘরের মানুষের খাবারের জোগান দিতেই কষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেখানেই ঘর ঠিক করানোর চিন্তা করমু কেমনে। হুনছি আমাগো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি গরিব মাইনষেরে ঘর দেয়। তাই আমিও আমাগো ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ধারে জিজ্ঞাসা কইরা গলাচিপার ইউএনও স্যারের কাছে একটি ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমনে খালি প্রধানমন্ত্রী না, আমনে আমার মা, মাগো সংসার স্ত্রী সন্তান নিয়ে আমি বড় কষ্টে আছি। আমগো একটা ঘরের ব্যবস্থা কইরা দেন। যাতে আমি সবাইরে লইয়া শুখে শান্তিতে থাকতে পারি। আমি আমনের লইগ্যা নামাজ পইরা সারা জীবন দোয়া করমু।

এসডি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১১:৪৭ ● ৭১৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ