
কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ফরাজি কান্দা গ্রামের পরিবারগুলো কখনও সরকারি কোন ত্রাণ পায়নি বলে দাবি করেছে। তাদের দাবি, দেশে অনেক দূর্যোগ-মহামারি হয়েছে কিন্তু কোন সময়েই তারা সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায়নি। ২ মে শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের সোনা পাড়া হতে হোসেন ফরাজি বাড়ি পর্যন্ত যে কয়টি বাড়ি আছে তারমধ্যে দু-একটি পরিবার ছাড়া বাকি সবাই সরকারি ত্রাণ বা অন্য সকল ধরনের সুবিধা হতে বঞ্চিত রয়েছে। বয়োজ্যেষ্ঠ সোবাহান ফরাজি (৬০) জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার বহু বছর পেরিয়ে গেছে, দেশে বহু দূর্যোগ-মহামারি পেরিয়ে গেছে, বহুবার সরকার বদল হয়েছে কিন্তু আজ অবধি আমাদের গ্রামে কোন ধরণের সরকারি সহায়তা আমরা পাইনি। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বলেও কোন লাভ হয়নি। ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মাঝ বয়সী এক নারী অভিযোগ করে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে গত এক মাস যাবৎ আমার পরিবার কর্মহীন রয়েছে, অথচ আমরা আজ পর্যন্ত কোন ত্রাণ পাইনি। পরিবার-পরিজন নিয়ে বর্তমানে একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে থেকে দিন যাপন করছি।
কলাপাড়া খাদ্য গুদামের শ্রমিক মিজান মৃধা নামের এক গ্রামবাসি জানান, আমাদের গ্রামটি ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে ও পৌরসভার কাছাকাছি হওয়ায় কেউ আমাদের খোঁজ-খবর নিতে আসে না। বার বার এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে গিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। তারা আজ দিবো, কাল দিবো বলে শুধু আমাদের আশ্বাস দিয়ে রাখছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা নুরছায়েদ ও আব্দুল লতিফ সিকদারসহ অনেকেই সাগরকন্যাকে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার আমাদের ঘরে থাকতে বলছে, কিন্তু সরকারি কোন সহায়তা আমরা পাইনি। আমরা কোথায় যাবো, বাইরে গেলে করোনার ভয়, আর বাড়ীতে বসে থাকলে না খেয়ে মৃত্যুর ভয়। আমরা সবাই বাঁচতে চাই, সরকারের সাহায্য চাই।
ত্রাণ না পাওয়ার বিষয়ে জানতে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিয়াজ হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাগরকন্যাকে বলেন, আমি এ পর্যন্ত যে ত্রান সামগ্রী পেয়েছি তা আমার এলাকার চাহিদার তুলনায় খুবই সীমিত। এই সীমিত সংখ্যক ত্রাণ দিয়ে সকলকে সহায়তা করতে আমি হিমসিম খাচ্ছি।
এ বিষয়ে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার জানামতে সকল স্থানে কম-বেশি ত্রাণ গিয়েছে। তারপরেও যদি কেউ ত্রান না পেয়ে থাকে পরবর্তিতে তাদের পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এপর্যন্ত আমার কাছে যারা এসেছে তাদের সবার নামের তালিকা রাখা হয়েছে।
এসকেআর/এনবি